যারা সমকামিতার বিরুদ্ধে, তাদের সম্মিলিতভাবে বিরোধিতা করতে হবে

ইসলামী দল হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মাটিকে কলুষিত করেছে। আমি বলবো, এত চিৎকার কেন? আমরা অনেক ধৈর্য্য ধরেছি, কিন্তু আর নেই। সমকামীদের অধিকারের বিরুদ্ধে জঙ্গী ও পশুরা যদি রুখে দাঁড়ায় এবং একজন সমকামীকে মারধর করে তাহলে পৃথিবী ও বিবেকবান মানুষ ঘরে বসে থাকবে না।

ইসলামের নামে এই ভন্ডামী মানুষের বোঝা সহজ হবে। ইসলাম কি শান্তির ধর্ম? এটাই কি তাদের শান্তির ভাষণ! দেশ স্বাধীন হয়নি! তাদের হাত থেকে দেশকে মুক্ত করার আহ্বান জানাচ্ছি। 1971 সালে, উদ্যমী ছেলেরা বাংলার দরিদ্রদের অধিকারের জন্য লড়াই করেছিল। ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য নয়। একদিকে ধর্ম কায়েম করা ভন্ডামী আর স্বাধীনতার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা!

পাকিস্তানের রাজনীতি হচ্ছে ভারত দখল করা। আর ভারতকে দখল করা সহজ হতো, যদি বাংলাদেশ পূর্ব পাকিস্তান থেকে যায়। কিন্তু ১৯৭১ সালে রক্তপাতের মাধ্যমে আমরা সেই পাকিস্তানকে পরাজিত করেছিলাম, বাংলাদেশের জন্ম দিয়ে, ইসলামের পোকামাকড় ও রাজনৈতিক মতবাদের চক্রান্তের বিরুদ্ধে লড়াই করে। স্বাধীন, অসাম্প্রদায়িক ও বাঙালি জাতি হিসেবে মাথা তুলেছে।

কিন্তু ১৯৭৫ সালের পর বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর, তারপর বন্দুকের ওপর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে জিয়া ক্ষমতায় আসেন। একাত্তরের সময় ও যুদ্ধের আগে এবং শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত পুরুষতান্ত্রিক সমাজের দাবিদার ইসলামপ্রেমীরা বাংলাদেশের জন্মের বিরুদ্ধে কাজ করেছে। স্বাধীনতার পর জিয়া যখন ক্ষমতা গ্রহণ করেন, তখনই দেখা গেছে দেশ থেকে পালিয়ে আসা পাকিপ্রেমীরা, ইসলামের পূজারী, পুরুষ আধিপত্যবাদী, ইসলামী মোল্লা ওরফে জামায়াত ইসলামের দাওয়াত নিয়ে দেশে ফিরেছে। আর জিয়া এই সুযোগ দিয়েছিলেন।সমকামী মানুষরা কখনোই বাংলাদেশের জন্যও সমস্যা সৃষ্টি করে নি, এরা অত্যন্ত নিরীহ স্বাভাবিক  ভদ্র  এবং ভীত মানুষ। আর এই দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়েছে পাকিপ্রেমীরা, ইসলামের পূজারী, পুরুষ আধিপত্যবাদী, ইসলামী মোল্লা ওরফে জামায়াত ইসলাম এবং হেফাজত ইসলাম।

আর যারা বাংলার জন্মের বিরুদ্ধে নানাভাবে কাজ করেছে তারা বাংলার মন্ত্রী হয়েছে, তাদের দেওয়া হয়েছে স্বাধীন বাংলার পতাকা, আমাদের ভাইদের রক্তের বিনিময়ে পতাকা তাদের গাড়িতে বয়ে গেছে, যারা জন্মের বিরুদ্ধে ছিল। বাংলাদেশ। তারা পাকিপ্রেমিক, ইসলামপ্রেমিক, পুরুষতান্ত্রিক প্রেমিক, ওরফে রাজাকার, স্বাধীনতাবিরোধী, সমকামীবিরোধী ও মানবতাবিরোধী।সমকাম কে নিজেদের সুবিধার জন্য ব্যবহার করেছে।গড়েছে মাদ্রাসা, এতিমখানার মত অভয়ারণ্য। যেখানে ইমাম হুজুররা দিনের পর দিন ধর্ম শিক্ষার নামে ধর্ষণ করেছে শিশু, ছেলে, মেয়ে সকলকে। কারন চার দেয়ালের আড়ালে প্রতিবাদ করার কেউ নেই। অসহায় শিশু কিশোরের আর্তনাদ, আহাজারি কার কানে পৌছবে না। এতিমখানা গুলো এদের এই বিকৃত যৌন লালসা পুড়নের প্রধান কেন্দ্রবিন্দু। কারন এতিম বাচ্চাদের খোঁজ নেয় না কেউ। সহজ টার্গেট। এরা বিশমকামি হয়ে জোরপূর্বক  সমকামিতায় লিপ্ত হতে বাধ্য করতো বাচ্চাদের। অনেক বাচ্চা ব্যাথা সহ্য করতে না পেরে মৃত্যুবরণ করতো। এতিম হওয়ায় তাদের লাশ দাফন করতে সহজ হতো। কেউ খবর নিয়ে দেখত না কিভাবে মারা গাছে বাচ্চাগুলো। শুধু তাই নয় মেয়েদেরকে দিনের পর দিন ধর্ষণ করতো পাড়া মহল্লার হুজুর ইমাম এবং রাজনৈতিক, ধর্মীয় নেতাদের বাড়ি পর্যন্ত সাপ্লাই দেয়া হতো এই অসহায় বাচ্চাগুলোকে। তাড়া ভহুলে যায় সমকামী মানুষেরা কখনোই জোরপূর্বক কার সাথে সম্পর্কে লিপ্ত হয় না। বিজ্ঞান সুস্পষ্ট ভাবে প্রমাণ করে দিয়েছে সমকামিতা কোন মানসিক ব্যাধি নয়। সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক। কিন্তু ধর্মের দোহাই দিয়ে, নিজেদের ইচ্ছে মত  বানানো হাদিস, ইসলামি বই বানিয়ে, এই সমকামিতাকে সুচতুর ভাবে ব্যবহার করেছে এই ধর্মীয় আর রাজনৈতিক  নেতারা। ধর্মের বিরুদ্ধে সমকামিতা সামনে আনলে মানুষ এদেরকে ঘৃণা করবে এবং এরা অত্যাচারিত হলে খুব কম সংখ্যক মানুষ অত্যাচারিত হবে কারন সবাইতো আর সমকামী না, তাহলে এরা মরে গেলে বা অত্যাচারিত হলে কারো কিছু যায় আসবে না। তাই এদেরকে ব্যাবহার করেই ধর্মের মান রক্ষার নামে সমকামী মানুষ মেরে এরা মানবতাবিরধি অপরাধ করে চলেছে যুগের পর যুগ।

পাকিপ্রেমীদের স্বপ্নে যোগদানের সুযোগ বাস্তবে পরিণত হতে থাকে এবং ইতিহাস বলে যে জিয়া তাদেরকে এমন সুযোগ দিয়ে এমপি হয়ে জামায়াত ও বিএনপি’র তলায় এই দেশকে ইসলামের আওতায় আনার জন্য নানা কর্মকাণ্ড সংগঠিত করেন। চালা আর দেশটা আবার পাল্টাতে শুরু করে। সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নৃশংস হামলার চিত্র দেখা গেছে! জামাত ও নিজামীর এই দলটি দেশ থেকে হিন্দুদের মুক্ত করে ইসলাম, শরিয়া আইন প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি এদেশকে আবার পাকিস্তানের অংশ করতে মরিয়া। এরপর যতদিন বিএনপির সাথে জামায়াত ক্ষমতায় এসেছে ততদিন তারা বাংলাদেশের ইতিহাসের বিরুদ্ধে কাজ করেছে এবং দেশকে পাকিস্তানের অংশ করার চেষ্টা করেছে।

আমাদের বর্তমান নেত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার কাছে প্রশ্ন, শেখ হাসিনাকে কেন প্রশ্ন করলাম জানেন? কারণ আমি জানতে চাই, জামায়াতের মতো আরেকটি স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি হেফাজতি ইসলামকে কীভাবে বাংলার মাটিতে অনুমতি দিতে পারলেন? ওই এক মাদ্রাসা আর এতিমখানা আর ধর্ম ব্যাবসা। ক্ষমতায় থাকতে হলে এই রাজনৈতিক, ধর্মীয় নেতাদের বাড়িতে সাপ্লাই দেয়া না হলে যে ক্ষমতায় টেকা যাবে না। তাহলে সমকামিতাকে অর্থাৎ এই অসহায় ভীত মানুষগুলোকে নির্বিচারে মেরে ধমন করে আপনি কি ঢাকতে চাইছেন? কারন সমকামিতাকে বৈধতা দিলে তো ক্ষমতায় থাকতেই পারবেন না আপনি তাইনা?

আপনি জানেন, কোন আদর্শের মানুষ বাংলাদেশ চায় না, তারা পাকিস্তান চায়! আর যারা একই মতাদর্শে বিশ্বাসী, শিবিরের সন্ত্রাসী তাদের আশ্রয় দিচ্ছেন কেন? আপনার মতো কষ্ট পেয়েছে এমন মানুষ দেশে খুব কমই আছে যাদের আদর্শের হাতে গোটা পরিবার শেষ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু অতীত ভুলে যা করেছেন তা কি গণনা করেছেন?

হয়তো করেননি? কিন্তু এসব অপকর্ম দেখলে আমার মনে হয় আপনারা ক্ষমতা ও ভোটের রাজনীতি করছেন। এখন আপনি জানেন আপনি কি করতে চান. কিন্তু আপনার অপকর্ম আমাদের কাছে খুব স্পষ্ট, এবং আমরা বুঝতে পারি এর ফলাফল কতটা ভয়াবহ হবে। আমি হিসাব দেব,

আমরা দেখেছি শাপলা  চত্বরের ঘটনার পর হেফাজতি জঙ্গিরা আপনার কাছাকাছি এসেছে। আর আপনি তাদের শুধু আপনার কাছাকাছি আসতে দেননি, সেই সন্ত্রাসী সংগঠনের প্রধানকে গণভবনের মতো জায়গায় বসতে দিয়েছেন। তখন আপনি বললেন ওরা আপনার ভাই, আপনিও সুপ্রিম কোর্টের ভাস্করকে পছন্দ করেন না! তখন হেফাজতকে নিয়মিত দেখলে মনে হয় তারা ক্ষমতায় আছে, আপনি নেই! কেন, আপনি কি জানেন?

হেফাজতের জঙ্গী নেতারা বিভিন্ন স্থানে এমন হুমকি-ধমকির বক্তৃতা দেয় যা তারা শান্তির ধর্মের বাণী বলে দাবি করে। তাদের এত সাহস কেন? কারণ তুমি তাদের রাণী মা! কেননা আপনি দেশের নিরপরাধ শিশুদের ১=আল্লাহ, ২=ধর্মে বিশ্বাস করার নির্দেশ দিয়েছেন! আপনি এটা করে তাদের মতবাদকে উৎসাহিত করছেন। কারণ আপনি তাদের দাবি পূরণ করেছেন, তারা শক্তিশালী বোধ করে। হে “প্রিয়” নেত্রী, আপনি কি করেছেন বুঝতে পেরেছেন?

আর মাননীয় শেখ হাসিনা, আপনিও দেশে ইসলামী আইন পাস করে আপনার মৃত পরিবারের সাথে অনৈতিক কাজ করে হেফাজতের হাতকে শক্তিশালী করেছেন। এছাড়া দেশের স্বাধীনতাকে টপকে চলছে কলঙ্ক। ভালো বুদ্ধি না থাকলে বাংলাদেশ বাংলাস্থান হয়ে যাবে। আফগানিস্তানের মতো যুদ্ধ চলবে; আকাশে উড়বে যুদ্ধবিমান।

তা না হলে সকল ইসলামপ্রেমিক, শরিয়াপ্রেমী, পুরুষতান্ত্রিক সমাজের প্রধান ভরসা, ওরফে হেফাজত ইসলাম, জামাত শিবির নামের ইসলামপন্থী জঙ্গিরা দেশের স্বাধীনতার ইতিহাস পাল্টে দেবে। কিন্তু আমরা তা হতে দেব না। আবারও বলছি, এই হেফেজত ও ইসলামী জঙ্গিরা যদি একজনও সমকামীকে আহত করে, তাহলে এদেশে এদেশের সচেতন মানুষকে স্বাধীনতার ডাক দিতে হবে।