মুসলমানরা এত নির্লজ্জ কেন?

একটি পুরানো খবর দিয়ে শুরু করছি- “2011 সালে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধের পর, 2015 সাল পর্যন্ত প্রায় 40 মিলিয়ন মানুষ দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছে।” এই সময়ের মধ্যে, এই সংখ্যা আরও কিছুটা বাড়তে পারে। আমেরিকা বা ইউরোপের কোনো দেশ যদি এই উদ্বাস্তুদের সামান্যতম অবহেলা করার চেষ্টা করে, তাহলে সারা বিশ্বে মুসলমানরা ক্ষোভে ফেটে পড়ে।

কিন্তু মজার ব্যাপার হলো, সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের পেছনে সৌদি আরব, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং কুয়েতের প্রধান ভূমিকা নিয়ে মুসলমানরা চিন্তিত নয়। এই দেশগুলো সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত বিদ্রোহী বাহিনীকে প্রকাশ্যে অর্থ ও অস্ত্র সরবরাহ করে। – তাদের সাথে মুসলমানদের কোন সমস্যা নেই। কি অদ্ভুত ব্যাপার!

আরেকটি মজার তথ্য হলো এই বৃহৎ উপসাগরীয় ইসলামি দেশগুলো (!)- কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব, কুয়েত, ওমান ও বাহরাইন, এদের কেউই সিরিয়ান মুসলিমকে (!) আশ্রয় দেয়নি, শুধুমাত্র এই ইউরোপ-আমেরিকানরাই দিয়েছে। তবে তাদের টাকা বা জায়গার অভাব আছে কিনা জানি না। এই মুসলিম(!) উদ্বাস্তুদের আশ্রয় না দেওয়ার কারণে তারা বলেছিল যে, এই উদ্বাস্তুরা যদি তাদের দেশে প্রবেশ করে তাহলে এই উদ্বাস্তুরা তাদের দেশকে নোংরা করবে! কিন্তু তখন আমাদের তথাকথিত মুসলিম মানবতাবাদীদের মধ্যে কোনো উদ্বেগ নেই! কিন্তু কেন নয়- তা আজও আমার অজানা!

এখানে আরেকটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, এই উপসাগরীয় আরব দেশগুলো বাংলাদেশের মুসলমানদের মুসলমান হিসেবে মেনে নিতে চায় না, তারা তাদের ‘বেগার’ বলে, এবং তারা বাংলাদেশি মুসলমানদের দাস বানিয়ে তাদের সঙ্গে সবচেয়ে খারাপ আচরণ করে। এটা প্রায়ই সবার জানা, খবরের কাগজেও প্রায়ই দেখা যায়। কিছুদিন আগে কয়েকজন বাংলাদেশী নারী শ্রমিক আরবদের দ্বারা ধর্ষিত হয়ে গর্ভে একটি শিশু নিয়ে বাড়ি ফেরার পর তারা এসে জানায়, সকালে মালিক তাদের ধর্ষণ করলে দুপুরে মালিকের বড় ছেলে, মালিকের ছোট ছেলে। বিকেলে মালিকের ছোট ছেলে রাতে পালাক্রমে তাদের ধর্ষণ! আর বাংলাদেশের এসব তথাকথিত মুসলিম মানবতাবাদীরা একেবারেই নীরব, এসব বিষয়ে তাদের কোনো অভিযোগ নেই।

তবে সবচেয়ে মজার তথ্য হলো- আমেরিকার  প্রেসিডেন্ট  তার নিজের দেশের নিরাপত্তার স্বার্থে কিছু দেশের মুসলমানদের তার দেশে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন এবং এতে সারা বিশ্বে প্রতিবাদে ফেটে পড়েছে আমাদের মুসলিম মানবতাবাদীরা। দেশ এরই মধ্যে আমেরিকান এবং ইউরোপের জনগণ তাদেরকে ইহুদী ইহুদী বলে গালি দিলেও তারা তাদের দেশের সুবিধা ভোগ করতে খুবই আগ্রহী। আর যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে চাপা পড়ে এত প্রতিবাদ! তাহলে আমার মনে একটা সহজ প্রশ্ন- মুসলিমরা এত নির্লজ্জ কেন?