পিস টিভি বা জাকির নায়েক, এমনকি কোরান-হাদিস ব্যান করেও কিছু হবে না। ব্যান করা উচিতও নয়। জাকির নায়েক যা বলেন,কোরান-হাদিস থেকেই বলেন। যেটা দরকার সেটা হলে, তার বক্তব্য এবং কোরান-হাদিসে কী কী অসংগতি, স্ববিরোধিতা ও ভুল-ভ্রান্তি আছে, সেগুলা সবার সামনে তুলে ধরা। সরকার ও প্রশাসন যদি কিছু করতে চায় তাহলে জাকির নায়েক-কোরান-হাদিসের কথায় ও লেখায় ‘অপরাধমূলক’ কিছু থাকলে সেই অংশটুকুর বিচার করা, সেসব নিয়ে জনগণকে সচেতন করা।
পৃথিবীতে অনেক বড় বড় কবি-সাহিত্যিক তাদের সৃষ্টিশীলতা, কাব্য-প্রতিভা, লেখনী শক্তির পরিচয় দিয়েছেন, দিচ্ছেন, দেবেন। কিন্তু তাদের সেইসব লেখা মানুষকে ধর্মের করাল গ্রাস থেকে কতটা উদ্ধার করতে পেরেছে, সে বিষয়ে যথেষ্ঠ সন্দেহ আছে। যেমন নজরুল ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে এত কবিতা-গান না লিখে যদি একটি আয়াত-হাদিস দেখিয়ে লিখতেন–এখানে পৃথিবীকে সমতল বলা হয়েছে যা ভুল; এখানে সূর্য পৃথিবীর চারদিকে ঘোরে বলা হয়েছে যা ভুল–তবে সেই এক লাইন লেখার কার্যকারিতা আরো অনেক বেশি হত।
ব্লগ-ফেসবুকেও অনেক শক্তিশালী লেখক আছেন যারা গল্প-কবিতা-প্রবন্ধ লেখাতে তাদের লেখনী শক্তির পরিচয় দিয়ে থাকেন। আবার অনেকে ঘাস-ফুল-লতা-পাতা-হিমু-হুআ-সেলফি-দলাদলি-গ্রুপিং-পিছে লাগা-সামনে লাগা এবং লাগালাগি নিয়ে বা লাগালাগির উদ্দেশ্যে লেখালেখি করেন। আগে এসব দেখে করুণা হত। কিন্তু এখন হয় না; ভাবি–যার যা ইচ্ছা, সেটা করতে পারবে, পূর্ণ স্বাধীনতা ভোগ করতে পারবে–সেটাই তো আলটিমেট চাওয়া।
যারা লেখক হতে চান, বক্তা হতে চান, যা ইচ্ছা হতে চান, হয়ে যান। আর যারা এই লেখক-বক্তাদের লেখার-বলার-যা ইচ্ছা করার স্বাধীনতার পক্ষে কাজ করতে চান–সেই কাজের নিশ্চয়ই একেক রকম বা যার যার নিজস্ব পদ্ধতি আছে। তবে আমার মনে হয়–ব্লগ-ফেসবুকে ধর্মের অসংগতি, স্ববিরোধিতা ও ভুল-ভ্রান্তিগুলো চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়া, সেগুলা মানুষের সামনে হাজির করা, তাদের কাছে পৌঁছে দেয়া–এসব পদ্ধতিতে ‘কাজ’ অনেক বেশী হয়।