রাষ্ট্রধর্ম ও রাষ্ট্রপতির হাতে ক্ষমা দানের ক্ষমতা একটা অবিচার

হোসেন মুহাম্মদ এরশাদের  দুইটা জিনিস আওয়ালীগ আর বিএনপি ক্ষমতায় গেলেই সেটা আকঁড়ে ধরে মনে প্রাণে কাজে লাগায় । প্রথমটা হলো রাষ্ট্রের একটাই ধর্ম থাকবে সেটা হলো ইসলাম আর দ্বিতীয়টা হলো রাষ্ট্রপতি কর্তৃক কোন আসামীর ক্ষমা মঞ্জুর ।

১৯৮৭ সালে একজন আসামীকে ক্ষমা করার মাধ্যমে  হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ রাষ্ট্রপতির ক্ষমা সংক্রান্ত সাংবিধানিক ক্ষমতাটি সর্বপ্রথম প্রয়োগ করেন । সংসদ থেকে পাওয়া তথ্যমতে ২০০৯ থেকে ২০১১ পর্যন্ত মোট ২১ জন মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামীকে রাষ্ট্রপতি ক্ষমা করে দিয়েছেন । এরপর তো আরও আছেই ।

রাষ্ট্রপতির এই ক্ষমা দেয়ার ক্ষমতার তথ্য-উপাত্ত থেকে যা বুঝলাম সেটা হলো যে, রাষ্ট্রপতি দ্বারা এই ক্ষমা প্রদর্শন একদমই সাংবিধানিক একটা ব্যাপার ।  মন চাইছে তাই উনি ক্ষমা করে দিয়েছেন ব্যাপারটা আসলে মোটে এই রকম না ।

রাষ্ট্রপতি যে দুইটা বিষয়বস্তুর উপর বেইজ করে কোন আসামীকে  ক্ষমা করতে পারেন সেটা নি:সন্দেহে মানবতার একটা বহি:প্রকাশ । 

প্রথমত, ধরুণ কারও বিচারে শাস্তি হয়েছে গেছে । এর পনেরো-বিশ বছর পর হঠাৎ বোঝা গেলো যে, তার বিচারে ভুল ছিলো,  তখন আবার বিচারে তাকে নির্দোষ প্রমাণে না গিয়ে রাষ্ট্রপতি তাকে ক্ষমা করতে পারেন।

দ্বিতীয়ত, আরেকটা একবারেই মানবিক কারণ হতে পারে । ধরুণ, সাজার বড় অংশ খাটার পর ক্যান্সার বা দূরারোগ্য কোনো ব্যধি হয়েছে । মেডিক্যাল সায়েন্সে কোন ট্রিটমেন্ট নেই । ঐ রকম সিচুয়েশনে রাষ্ট্রপতি ক্ষমা করতে পারেন । 

কিন্তু আফসোস, রাষ্ট্রপতি কর্তৃক এই মানবতাকে অসৎ উদ্দেশ্যে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় গেলে আওয়ামীলীগ কাজে লাগায় আবার বিএনপি ক্ষমতায় গেলে বিএনপি কাজে লাগায় । এরশাদের প্রবর্তিত রাষ্ট্রপতির ক্ষমা আর রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম এখন দেশের প্রধান রাজনৈতিক দুইটা দলের প্রধান রাজনৈতিক অস্ত্র ।