হাসিনা লীগ

সেদিন সাংবাদিকদের ইফতার পার্টিতে থাকা প্রথম সারির সাংবাদিকদের একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী সেদিন আনুষ্ঠানিক ইফতার পার্টির যে বক্তৃতা সেখানে কিছুই বলেননি। সাংবাদিক নেতাদের নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত’র প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে যে কথাগুলো বলেছিলেন জাগো নিউজ সেটাই ছেপেছে। অন্যান্য কাগজ প্রধানমন্ত্রীর আনুষ্ঠানিক ইফতার পার্টির বক্তব্যই ছেপেছে বা টিভি চ্যানেলগুলো দেখিয়েছে। উপস্থিত ১০০ জন সাংবাদিক সবাই জাগো নিউজের বক্তব্য তাদের নিজ কানেই শুনেছেন। তবে এ বিষয়ে কেউই মুখ খুলতে চাইছেন না…।

যেহেতু নাম প্রকাশে অনেচ্ছুক উপস্থিত একজন সাংবাদিকের বক্তব্য কোন অথেনটিক সোর্স হতে পারে না তাই নিজেকে এই প্রশ্নগুলো করে আসল সত্যটা বুঝতে চেষ্টা করুন- সেদিন সাংবাদিকদের ইফতার পার্টিতে প্রধানমন্ত্রীর যে বক্তব্য জাগো নিউজে ছাপা হয়েছিল তা অসত্য বানোয়াট- যে তিনজন মন্ত্রীর নাম নিউজে এসেছে- তাদের তিনজনের কেউ কি এমন দাবী করেছেন? স্বয়ং তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুকে জড়িয়ে জাগো নিউজ যে সংবাদ পরিবেশন করেছে- সেই নিউজ অসত্য হলে তথ্যমন্ত্রী কি বসে থাকতেন?

মহা প্রতাপশালী আওয়ামী সাংবাদিক নেতারা সেদিন ইফতার পার্টিতে উপস্থিত ছিলেন। অনলাইনে ভাইরাল হওয়া নিউজটি তাদের চোখ এড়ানোর কথা নয়। জাগো নিউজ কোন এলেবেলে নিউজ সাইট নয়। দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের এই নিউজ সাইটটি এতখানি আষাঢ়ে নিউজ তৈরি করে ফেলবে- তাও আবার সাংবাদিকদের ইফতার পার্টি নিয়ে- আর সাংবাদিক নেতারা সেটা বসে বসে দেখবেন? ওয়াল্টন পণ্যকে ভেজাল বলেই এক নিউজ সাইট সম্পাদক জেলের ঘানি টেনেছে। সেখানে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে বানোয়াট নিউজ করেও কোথাও কোন চৈ চৈ নেই! প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে ফেইসবুক কোন ব্যঙ্গ কৌতুক হলেই দেশের আনাচে-কানাচে থেকে লোকজনকে গ্রেফতার করা হয়। সেখানে জাগো নিউজের ধড়ে কয়টা মাথা?

যেসব লীগান্ধরা দাবী করছেন প্রধানমন্ত্রী এমন কথা বলতেই পারেন না- তাদের এই বিশ্বাসের সোর্স কি? শামীম ওসমান প্রকাশ্যেই বলেন তিনি আওয়ামী লীগ করেন না তিনি ‘হাসিনা লীগ’ করেন। যারা শামিমের মত একই পার্টি করেন তাদের এত শরমের কি আছে বুঝি না। প্রধানমন্ত্রী সেদিনের বক্তব্য পড়ে দেশের সাধারণ মুসলমানরা তো বেজায় খুশি। আপনারা এত বিব্রত হচ্ছেন কেন?