ইয়োরোপ আমেরিকা এসে উড়ে এসে জুড়ে বসা মুসলমানদের কাজ কর্ম দেখে যান, ট্রাম্পের কথা বেশীরভাগ ইয়োরোপিয়ান আর আমেরিকানদের মনেরই কথা। পশ্চিমা কোনো দেশ বা সরকার যে কথা দুদিন পরে উচ্চারণ করতো, ট্রাম্প তা দুদিন আগেই উচ্চারণ করে ফেলেছেন। ইসলামের প্রতি পশ্চিমা জনগণের সহিষ্ঞুতার বাঁধ ভাঙ্গলো বলে। আপনার জীবদ্দশায়ই তা দেখে যেতে পারবেন। ইসলাম অন্য ধর্মের প্রতি এবং ধর্মহীনদের প্রতি কতটা সহিষ্ঞু, কতটা আন্তরিক, অথবা কতটা শ্রদ্ধাশীল- তার প্রমাণ কোরাণেই আছে। যারা কোরাণ পড়বেন না বলে ঠিক করেছেন, তারা বিশ্বের মুসলমানদের আচরণ লক্ষ্য করুন। প্রতিদিন বিশ্বে এমন অসংখ্য ঘটনা ঘটছে, যা থেকে ভিন্ন বিশ্বাস বা মতাবলম্বীদের প্রতি মুসলমানদের শ্রদ্ধাবোধের প্রমাণ পাবেন। তারপরও আপনি দেখতে পারছেন না? আসুন, আপনার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছি।-
অমুসলমানদের সঙ্গে বন্ধুত্ব না করতে মুসলমানদের প্রতি কোরাণে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ইহুদিদেরকে দেখামাত্র হত্যা করতে মুসলমানদেরকে বলা হয়েছে কোরাণে। বলা হয়েছে,- ততোদিন পর্যন্ত কেয়ামত হবে না, যতোদিন পৃথিবীতে একজন ইহুদীও বেঁচে থাকবে। অন্য ধর্মাবলম্বীদেরকে ইসলামে দীক্ষিত করাতে হবে। কাফেরদের রাজত্ব ধ্বংস করে পৃথিবীতে শুধু ইসলাম প্রতিষ্ঠা করতে হবে, আর সেটা যে কোনো ভাবে। প্রতিটি মুসলমানের জন্য ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য যুদ্ধ এবং জিহাদ ফরজ করা হয়েছে। কোনো মুসলমান ইসলাম ত্যাগ করলে তাকে হত্যা করতে হবে।
এবার আপনার চোখের সামনে ঘটছে, এমন কিছু ঘটনা বলি। ইসলামের জন্মভূমি সৌদি আরবে অন্য কোনো ধর্মের প্রচার, এমনকি চর্চা আইন করে নিষেধ করা হয়েছে। সেখানে অন্য কোনো ধর্মের উপাসনালয় তৈরী করা নিষেধ। এমনকি, মক্কা ও মদিনায় ভিন্ন ধর্ম বিশ্বাসীদের প্রবেশ পর্যন্ত নিষেধ। বিশ্বের আরো অন্যান্য ইসলামী রাষ্ট্রগুলোতেও ভিন্ন ধর্মাবলম্বী বা ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় স্বাধীনতা, ধর্মীয় অধিকার আর নিরাপত্তা সৌদি আরবের মতো আইন করে বন্ধ করা না হলেও, কার্যত অবস্থা সৌদি আরবের চেয়ে ভালো কিছু নয়।
নিজেদের দেশ বাঙলাদেশের দিকেই তাকান। ১৯৭১ থেকে এ পর্যন্ত দেশে প্রতিদিন নির্যাতিত হতে হতে এ পর্যন্ত মোট কত লক্ষ ধর্মীয় সংখ্যালঘু তাদের প্রিয় মাতৃভূমি ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছে, তার পরিসংখ্যান ইন্টারনেট ঘাটলেই পাবেন। দেশের সরকার, প্রতিটি রাজনৈতিক দল আর সরকারী প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, গণমাধ্যম আর সমাজের সর্বত্র যে পরিমাণ ইসলামীকরণ করা হয়েছে, ঠিক সেই পরিমান অন্য ধর্ম বা ভিন্ন মতকে কোনঠাসা করা হয়েছে। ইসলামের সমালোচনা আর বিজ্ঞানের মাধ্যমে ধর্মান্ধতা আর কুসংস্কারের বিরুদ্ধে কথা বলাকে আইন করে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ইসলামের যৌক্তিক সমালোচনাকারীকে প্রকাশ্যে হত্যার ফতোয়া, হত্যার হুমকি, এমনকি বর্বর মধ্যযুগীয় কায়দায় হত্যা করা প্রতিটি ইসলামী রাষ্ট্রেরই সংস্কৃতি।
শুধু মুসলিম প্রধান রাষ্ট্রগুলোতেই মুসলমানরা তাদের প্রাণের শরিয়া কায়েমের জিহাদ নিয়ে বসে নেই, মুসলমানরা আজ মরিয়া সারা বিশ্বে খেলাফত প্রতিষ্ঠায়। সারা বিশ্বের ইসলামী সন্ত্রাসবাদে যতোই পশ্চিমা রাজনীতি খুঁজেন না কেনো, তাতে কোরাণ হাদিসের সঙ্গে মিল, মুসলমানদের সমর্থন আর শতস্ফুর্ত অংশগ্রহণও দেখুন।
বিশ্বের সকল অসহিষ্ঞু, অগণতান্ত্রিক আর পশ্চাৎপদ এসব যুদ্ধবিদ্ধস্থ আর দরিদ্র ইসলামী দেশের কোটি কোটি মুসলমানরা আজ ঘরছাড়া। মুসলমানরা ইয়োরোপ আমেরিকার উন্নত মানবাধিকার, আধুনিক গণতন্ত্র আর ধর্মীয় স্বাধীনতার সুযোগ নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোতে আশ্রয়ের নামে তাদের আজীবনের স্বপ্ন বাস্তবায়নে ব্যস্ত হয়ে যায়। তারা পশ্চিমের মানুুষ, তাদের শিক্ষা আর সংস্কৃতির প্রতি অশ্রদ্ধা পোষণ করে, নিজেদের মধ্যযুগীয় বর্বর ধর্মীয় সংস্কৃতি সবার উপর চাপিয়ে দিতে চায়, নিজেদের প্রাণের খেলাফত প্রতিষ্ঠায় বিধ্বংসী হয়, হাতে অস্ত্র তুলে নেয়, নিরিহ মানুষ হত্যার উৎসবে মেতে ওঠে।
এবার ভাবুন, আপনার নিজের হাতে গড়া সুন্দর আর সভ্য মাতৃভূমিতে কোনো অসভ্য গোষ্ঠী তাদের রাজত্ব কায়েম করতে চাইলে, আপনি কি করবেন?