যে সব উদ্ভট ও অদ্ভুত কথাবার্তা বলে সেই ১৪০০ বছর আগে মোহাম্মদ মানুষের মন ভোলাতেন তা দেখলে সত্যিই সত্যিই আশ্চর্য হতে হয়। শুধু সেই আগে কেন , বর্তমানেও কোটি কোটি মানুষ জেনে না জেনে সেই সব আজগুবি গল্পে মাতোয়ারা হয়ে আছে, এটা নি:সন্দেহে মোহাম্মদের এক বিস্ময়কর সাফল্য যাকে স্বীকার করতেই হবে। সেই সাথে সাথে খুব দু:খও হয় ভাবতে যে কিভাবে আজকে শিক্ষিত নামধারী এক শ্রেনীর মানুষ এ ধরণের আজগুবী কিচ্ছা কাহিনী বিশ্বাস করে তাতে মশগুল থাকতে পারে। এসব আজগুবি কিচ্ছা কাহিনীর মধ্য দিয়ে মোহাম্মদের কোরান ও তাঁর সাহাবীদের লিখিত হাদিসে তাঁর আল্লাহর সম্পর্কে আমাদের যে ধারণা গড়ে ওঠে দেখা যায় সে আল্লাহ চুড়ান্ত রকম স্বেচ্ছাচারী, একনায়ক, বদরাগী, অসহিষ্ণু, প্রতিশোধপরায়ণ, ঈর্ষা পরায়ণ, নিষ্ঠুর, ক্রুদ্ধ এক ব্যক্তিত্ব। যদিও কোরানে মাঝে মাঝে বলা হয়েছে আল্লাহ ক্ষমাশীল কিন্তু ক্ষমার কোন উদারহরণ কোরানে দেখা যায় না, এমনকি এমন একটাও বর্ণনা নেই কোরানে যেখানে বলা হয়েছে আল্লাহর তার সৃষ্ট বান্দা তথা মানুষদেরকে ভালবাসে।
ধরা যাক, একজন পিতার ৩ টি সন্তান আছে, তার মধ্যে একজন পিতার অবাধ্য। যে কারনে সে বাড়ী ত্যাগ করে অন্যত্র বাস করে। পিতার অবাধ্য অর্থ এ নয় যে সে পিতা বা তার অন্য ভাইদের কোন ক্ষতি করার তালে আছে।সে আছে তার মত করে। পিতা বা ভাইদের ধার ধারে না, কাছে পিঠেও আসে না। এমতাবস্থায়, দুনিয়ায় কয়টি পিতা আছে যে সে তার অবাধ্য সন্তানকে ঘৃণা করবে বা তাকে হত্যা করতে চাইবে? সম্ভবত: একটিও নেই। দেখা যাবে, পিতা তার সেই অবাধ্য সন্তানকে ঠিকই ভিতরে ভিতরে ভালবাসে ও তার কল্যাণ কামনাই করে, স্বপ্নেও সে তার কোন অকল্যাণ কামনা করে না, হত্যা করার কথা তো সে কল্পনাও করে না। এখন কিতাব মোতাবেক, দুনিয়ার সকল বান্দা তথা মানুষ প্রকারান্তরে আল্লাহর সন্তান তূল্য, যেহেতু তারা তাঁর দ্বারা সৃষ্ট। এসব বান্দাদের সবাই আল্লাহর বাধ্য হবে এমন নাও হতে পারে। এর যথার্থ কারনও আছে।প্রথম ও প্রধান কারন বোধ হয় এটাই যে- আল্লাহ কোন দিন কোন মানুষের সামনে দেখা দিয়ে বলে নি যে সে আল্লাহ আর সব রকম ক্ষমতাই তার করায়ত্ব। যেটা দেখা যায় তা হলো- হঠাৎ হঠাৎ কোন এক অপ্রকৃতিস্থ ব্যাক্তি নিজেকে আল্লাহ প্রেরিত বা নবী হিসাবে দাবী করে বলছে- তাকে আল্লাহ মানুষের হেদায়েতের জন্য পাঠিয়েছে।কিন্তু অকাট্য ভাবে কোন নবী প্রমান দিতে পারেনি যে সত্যি সত্যি আল্লাহ সেসব নবীদের সাথে দেখা করেছে অথবা আল্লাহ প্রেরিত ফেরেস্তা তাদের সাথে দেখা করেছে। যে কারনে প্রতিটি ধর্মের প্রথম শর্তই হলো- বিশ্বাস বা ঈমান যার সোজা অর্থ হলো অন্ধ বিশ্বাস। ঠিক এরকমই একজন নবী দাবীকারি হলেন- মোহাম্মদ। এমতাবস্থায় যে কেউই সে নবীকে বিশ্বাস করতেও পারে, নাও পারে। যারা বিশ্বাস করে তাদেরকে বাধ্য বলা হলে যারা বিশ্বাস করে না তাদেরকে অবাধ্য বলা যেতে পারে। ঠিক তেমন ভাবেই মোহাম্মদকে কিছু মানুষ তাঁকে বিশ্বাস করেছিল আর কিছু মানুষ বিশ্বাস করে নি। এখন প্রতিটি মানুষ যদি আল্লাহর বান্দা তথা সন্তানের মত হয়, আল্লাহ কিভাবে তার নবীকে বলতে পারে- অবাধ্য সন্তানদেরকে হত্যা করতে, উচ্ছেদ করতে, তাদের ধণ-সম্পদ লুট-পাট করতে ? তার পরেও কথা হলো এ অবাধ্যতার জন্য কিন্তু আবার বান্দাগুলো দায়ীও নয়। তা দেখা যাক নিচের হাদিসে-
আনাস ইবনে মালেক বর্ণিত, হুজুর বলিয়াছেন, আল্লাহ মাতৃগর্ভে একজন ফিরিস্তা মোতায়েন রাখিয়াছেন। ফিরিস্তা বলে, হে প্রভু! এখনও তো ভ্রুণমাত্র, হে প্রতিপালক! এখন জমাটবদ্ধ রক্তপিন্ডে পরিণত হইয়াছে। হে প্রতিপালক! এইবার গোশতের টুকরায় পরিণত হইয়াছে। আল্লাহ যদি তাহাকে পয়দা করিতে চান তখন ফিরিস্তা বলে, হে আমার প্রভু! সন্তানটি ছেলে না মেয়ে হইবে? হে আমার প্রভু! পাপী হইবে, না নেককার হইবে? তাহার রিজিক কি পরিমাণ হইবে ? তাহার আয়ু কত হইবে? অতএব এইভাবে সকল কিছু তাহার মাতৃগর্ভেই লিখিয়া দেওয়া হয়। সহি বুখারী, বই নং-৫৫, হাদিস নং-৫৫০
উক্ত হাদিস দ্বারা বোঝা যাচ্ছে, কোন একজন মানুষ যে ধার্মিক বা নাস্তিক হয় এটা তার নিজের দোষ না, এটা খোদ আল্লাহ নিজেই নির্ধারণ করে দেয়। এর পর কেউ যদি মোহাম্মদকে নবী হিসাবে বিশ্বাস না করে , এর জন্য তাকে আবার আল্লাহ হত্যা করতে বলে কিভাবে , তাকে দোজখের আগুনে পোড়ানোর কথা কিভাবে বলে, তার ধণ-সম্পদ লুন্ঠন করতে কিভাবে বলে ? এটা কোরানেও আছে যেমন-
নিশ্চিতই যারা কাফের হয়েছে তাদেরকে আপনি ভয় প্রদর্শন করুন আর নাই করুন তাতে কিছুই আসে যায় না, তারা ঈমান আনবে না। আল্লাহ তাদের অন্তকরণ এবং তাদের কানসমূহ বন্ধ করে দিয়েছেন, আর তাদের চোখসমূহ পর্দায় ঢেকে দিয়েছেন। আর তাদের জন্য রয়েছে কঠোর শাস্তি। কোরান-বাকারা,২:৬-৭
অতঃপর তোমাদের কি হল যে, মুনাফিকদের সম্পর্কে তোমরা দু’দল হয়ে গেলে? অথচ আল্লাহ তা’আলা তাদেরকে ঘুরিয়ে দিয়েছেন তাদের মন্দ কাজের কারনে! তোমরা কি তাদেরকে পথ প্রদর্শন করতে চাও, যাদেরকে আল্লাহ পথভ্রষ্ট করেছেন? আল্লাহ যাকে পথভ্রান্ত করেন, তুমি তার জন্য কোন পথ পাবে না।কোরান, নিসা-৪:৮৮
বস্তুত: কোরানের উপরোক্ত সহি বুখারী, বই নং-৫৫, হাদিস নং-৫৫০ কোরানের ২:৬-৭ আয়াতকে ব্যখ্যা করে। যে মানুষের অন্ত:করণ আল্লাহ আগেই সীল করে দিয়েছে তার পক্ষে কিভাবে সম্ভব আল্লাহ প্রেরিত নবী মোহাম্মদকে বিশ্বাস করা? হাদিস নং -৫৫০ মোতাবেক ও আয়াত নং-২:৬-৭ মোতাবেক অত্যন্ত পরিষ্কার যে- কে বিশ্বাসী বা অবিশ্বাসী হবে তা সে লোক পৃথিবীতে জন্মলাভের আগেই আল্লাহ কর্তৃক পূর্ব নির্ধারিত। আল্লাহ যা নির্ধারণ করে দিয়েছে তা খন্ডাতে পারে কে? ৪:৮৮ আয়াত বলছে- আল্লাহই মুনাফিকদেরকে তাদের মন্দ কাজের কারনে ঘুরিয়ে দিয়েছে। কিন্তু তারা যে মন্দ কাজ করেছে সেটা তো তাদের জন্য নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছিল তাদের জন্মের আগেই আর সেটা কিন্তু উক্ত আয়াতের পরের অংশেও অত্যন্ত পরিষ্কার যেখানে বলা হচ্ছে- তোমরা কি তাদেরকে পথ প্রদর্শন করতে চাও, যাদেরকে আল্লাহ পথভ্রষ্ট করেছেন? আল্লাহ যাকে পথভ্রান্ত করেন, তুমি তার জন্য কোন পথ পাবে না। আল্লাহ যাকে পথ ভ্রুষ্ট করেছে সে তো কখনোই বিশ্বাসী হবে না, সে আল্লাহর পথে আসবে না। এখন প্রশ্ন হলো- তারা যদি অবিশ্বাসী হয় তাহলে তাদের জন্য দায়ী কে? তারা নিজেরা নাকি আল্লাহ স্বয়ং? এ বিষয়ে যখন ইসলামী পন্ডিতদেরকে জিজ্ঞস করা হয় তারা নানারকম মনগড়া উত্তর দেয়।বলে- আল্লাহ বলছে সবাইকে বিশ্বাস করতে, ভাল কাজ করতে তাহলে সে অনুযায়ী আল্লাহ তাদেরকে পুরষ্কার প্রদান করবে। কিন্তু সেটা কিভাবে সম্ভব যখন সেই একই আল্লাহ মানুষের জন্মের আগেই শুধু নির্ধারণ করেই দেয় না যে কে অবিশ্বাসী হবে বা খারাপ কাজ করবে, পরন্তু আল্লাহ অবিশ্বাসী মানুষের অন্তকরনে সীলও মেরে দিয়েছে? এর পর যদি এদের মধ্যে কেউ দুর্ঘটনাক্রমে বিশ্বাসী হয় ও ভাল কাজ করে তাহলে অন্য একটা বিরোধের সৃষ্টি হয়। তা হলো-আল্লাহর ক্ষমতাকে ভুল প্রমান করা হয় অর্থাৎ আল্লাহর বিধাণ ভুল প্রমানিত হয়, যা পরিশেষে বিশ্বাসী ব্যক্তির ক্ষমতা আল্লাহর ক্ষমতার চাইতে বেশী প্রমান করে, প্রমান করে আল্লাহর ক্ষমতা খুব সীমিত অথবা কোন ক্ষমতাই নেই মানুষের আচরণ নিয়ন্ত্রনের তথা কোন কিছু নিয়ন্ত্রনের। সুতরাং কোন দিক দিয়েই বিষয়টি ঠিক পরিষ্কার নয় ও প্রচন্ডরকম স্ববিরোধী বলেই দৃশ্যমান হচ্ছে। এবার দেখা যাক, যাদেরকে আল্লাহ নিজেই অবিশ্বাসী হিসেবে সৃষ্টি করেছে তাদের সাথে আল্লাহ কি ধরণের আচরণ করছে বা তার বিশ্বাসী বান্দাদেরকে কি ধরণের আচরণ করতে বলছে-
যে ব্যক্তি আল্লাহ তাঁর ফেরেশতা ও রসূলগণ এবং জিবরাঈল ও মিকাঈলের শত্রু হয়, নিশ্চিতই আল্লাহ সেসব কাফেরের শত্রু। কোরান, বাকারা-২:৯৮
নিশ্চয় যারা কুফরী করে এবং কাফের অবস্থায়ই মৃত্যুবরণ করে, সে সমস্ত লোকের প্রতি আল্লাহর ফেরেশতাগনের এবং সমগ্র মানুষের লা’নত। কোরান, বাকারা-২: ১৬১
আর লড়াই কর আল্লাহর ওয়াস্তে তাদের সাথে, যারা লড়াই করে তোমাদের সাথে। অবশ্য কারো প্রতি বাড়াবাড়ি করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সীমালঙ্ঘনকারীদেরকে পছন্দ করেন না। কোরান, বাকারা-২:১৯০
আর তাদেরকে হত্যাকর যেখানে পাও সেখানেই এবং তাদেরকে বের করে দাও সেখান থেকে যেখান থেকে তারা বের করেছে তোমাদেরকে। বস্তুতঃ ফেতনা ফ্যাসাদ বা দাঙ্গা-হাঙ্গামা সৃষ্টি করা হত্যার চেয়েও কঠিন অপরাধ। আর তাদের সাথে লড়াই করো না মসজিদুল হারামের নিকটে যতক্ষণ না তারা তোমাদের সাথে সেখানে লড়াই করে। অবশ্য যদি তারা নিজেরাই তোমাদের সাথে লড়াই করে। তাহলে তাদেরকে হত্যা কর। এই হল কাফেরদের শাস্তি। কোরান, বাকারা-২:১৯১
তোমাদের উপর যুদ্ধ ফরয করা হয়েছে, অথচ তা তোমাদের কাছে অপছন্দনীয়। পক্ষান্তরে তোমাদের কাছে হয়তো কোন একটা বিষয় পছন্দসই নয়, অথচ তা তোমাদের জন্য কল্যাণকর। আর হয়তোবা কোন একটি বিষয় তোমাদের কাছে পছন্দনীয় অথচ তোমাদের জন্যে অকল্যাণকর। বস্তুতঃ আল্লাহই জানেন, তোমরা জান না। কোরান, বাকারা-২:২১৬
তোমরা যদি আহত হয়ে থাক, তবে তারাও তো তেমনি আহত হয়েছে। আর এ দিনগুলোকে আমি মানুষের মধ্যে পালাক্রমে আবর্তন ঘটিয়ে থাকি। এভাবে আল্লাহ জানতে চান কারা ঈমানদার আর তিনি তোমাদের কিছু লোককে শহীদ হিসাবে গ্রহণ করতে চান। আর আল্লাহ অত্যাচারীদেরকে ভালবাসেন না। কোরান, আল ইমরান-৩:১৪০
আর এ কারণে আল্লাহ ঈমানদারদেরকে পাক-সাফ করতে চান এবং কাফেরদেরকে ধবংস করে দিতে চান। কোরান, আল ইমরান-৩:১৪১
তোমাদের কি ধারণা, তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করবে? অথচ আল্লাহ এখনও দেখেননি তোমাদের মধ্যে কারা জেহাদ করেছে এবং কারা ধৈর্য্যশীল। কোরান, আল ইমরান-৩:১৪২
যারা ঈমানদার তারা যে, জেহাদ করে আল্লাহর রাহেই। পক্ষান্তরে যারা কাফের তারা লড়াই করে শয়তানের পক্ষে সুতরাং তোমরা জেহাদ করতে থাক শয়তানের পক্ষালম্বনকারীদের বিরুদ্ধে, (দেখবে) শয়তানের চক্রান্ত একান্তই দুর্বল। কোরান, নিসা-৪:৭৬
তুমি কি সেসব লোককে দেখনি, যাদেরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল যে, তোমরা নিজেদের হাতকে সংযত রাখ, নামায কায়েম কর এবং যাকাত দিতে থাক? অতঃপর যখন তাদের প্রতি জেহাদের নির্দেশ দেয়া হল, তৎক্ষণাৎ তাদের মধ্যে একদল লোক মানুষকে ভয় করতে আরম্ভ করল, যেমন করে ভয় করা হয় আল্লাহকে। এমন কি তার চেয়েও অধিক ভয়। আর বলতে লাগল, হায় পালনকর্তা, কেন আমাদের উপর যুদ্ধ ফরজ করলে! আমাদেরকে কেন আরও কিছুকাল অবকাশ দান করলে না। ( হে রসূল) তাদেরকে বলে দিন, পার্থিব ফায়দা সীমিত। আর আখেরাত পরহেযগারদের জন্য উত্তম। আর তোমাদের অধিকার একটি সূতা পরিমান ও খর্ব করা হবে না। কোরান, নিসা-৭৭
তারা চায় যে তারা যেমন কাফির তোমরা তেমন কাফির হয়ে যাও, যাতে তোমরা সবাই একরকম হতে পার।অতএব তাদের মধ্য থেকে কাউকে বন্ধু রূপে গ্রহন করিও না যে পর্যন্ত না তারা আল্লাহর পথে হিজরত করে চলে আসে। অত:পর তারা যদি ফিরে যায়, তাদেরকে পাকড়াও কর আর হত্যা করো যেখানে পাও, তাদের কাউকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না, সাহায্যকারী বানিও না- কোরান, সূরা: নিসা ৪:৮৯
তোমরা যুদ্ধ করো আহলে কিতাবের (ইহুদী ও খৃষ্টান) ঐ লোকদের সাথে যারা কিয়ামতে বিশ্বাস করে না, আর হারাম করে না যা আল্লাহ হারাম করেছে, আর সত্য ধর্মে বিশ্বাস করে না যা তাদেরকে দেয়া হয়েছে, যে পর্যন্ত না তারা জিজিয়া কর প্রদান করে ও আনুগত্য প্রদর্শন না করে। কোরান, আত-তাওবা-৯:২৯
এরকম আরও বহু আয়াত উল্লেখ করা যেতে পারে। এখন প্রশ্ন হলো-যে মানুষের ভাগ্য আল্লাহ তার মাতৃগর্ভে থাকতেই নির্ধারণ করে দিয়েছে তাকে কেন আল্লাহ এতভাবে হুমকি, ধামকি প্রদান করবে, খুন করতে চাইবে বা দোজখের আগুনে পোড়াতে চাইবে? আবার বলা হয় আল্লাহ হলো পরম করুণাময় ও দয়ালু। একজন পরম দয়ালু আল্লাহ কিভাবে একবারও তার বান্দাদেরকে ভালবাসার কথা না বলে ক্রমাগত এতভাবে ভয় দেখাচ্ছে? এ থেকে স্বভাবতই প্রশ্ন আসে সত্যি কি আল্লা বা সৃষ্টিকর্তা বা ঈশ্বর এসব কথা মোহাম্মদকে বলেছে? আর যে সে ভয় নয়, একেবারে খুনখারাবি পর্যন্ত।তার এসব হুমকি ধামকি থেকে কি প্রমানিত হয় যে আল্লাহ সত্যি সত্যি দয়ালু? আল্লাহ কেন তার অবাধ্য বান্দাদের প্রতি করুণাময় নয়, কেন তাদের ভালবাসে না ? আর যেখানে তাদের অবাধ্যতার জন্য তারা নিজেরাই দায়ী নয় ? তাহলে আল্লাহ কি রক্তের হোলিখেলা খেলতে এসব অবিশ্বাসী মানুষ সৃষ্টি করেছিল? এ কোন ধরনের আল্লাহ যে খালি খুন খারাবি পছন্দ করে?
তবে হাদিস থেকে একটা খুব মজার তথ্য বেরিয়ে আসে। সেটা হলো- মোহাম্মদ মানুষদেরকে ইসলামে টানার জন্য উৎকোচ প্রদান করছেন। অনেকটা বাংলাদেশে যেমন এক সময় স্বৈরশাসকদের আমলে রাজনৈতিক দল থেকে মন্ত্রীত্ব বা টাকার লোভ দিয়ে তাদের দলে টানা হতো। যেমন-
ইবনে আব্বাস হুজুর হইতে বর্ণনা করিয়াছেন। হুজুর বলিয়াছেন, প্রত্যূষের সমীরণ দ্বারা আমাকে সাহয্য করা হইয়াছে এবং দুবুর দ্বারা আদ জাতিকে ধ্বংস করা হইয়াছে।
আবু সাইদ হইতে বর্ণিত, আলী হুজুর এর নিকট কিছু স্বর্ণের টুকরা পাঠাইলেন?। তিনি তাহা চারিজন লোকের মধ্যে বন্টন করিয়া দিলেন। তিনি তাহা চারিজন লোকের মধ্যে বন্টন করিয়া দিলেন। তাহারা হইলেন-আকরা ইবনে হাবিস আল হানযালী, যিনি মাজশিরী গোত্রভুক্ত ছিলেন।উয়াইনা ইবনে বদর আল ফাযারী যায়েদ আত্তায়ী যিনি বনু নাবহান গোত্রভুক্ত ছিলেন এবং আলকাম ইবনে উলাছা আল আমেরী যিনি বনু কিলাবের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। ইহাতে আনছার ও কুরাইশরা ক্ষুব্ধ হইলেন এবং বলিতে লাগিলেন, তিনি নজদবাসীদের নেতাদিগকে দিতেছেন আর আমাদিগকে উপেক্ষা করিতেছেন।হুজুর বলিলেন, আমি তো তাহাদিগকে (ইসলামে আকর্ষণের জন্য) মন খুশী করিবার জন্য দিতেছি। তখন এক ব্যক্তি সামনে অগ্রসর হইল, যাহার চক্ষুদ্বয় কোটরাগত, গন্ডদ্বয় স্খলিত, ললাট উচু, দাড়ি ঘন ও মস্তক মুন্ডানো। সে বলিল, হে মুহাম্মদ! আল্লাহকে ভয় কর। তিনি বলিলেন, আমি যদি নাফরমানি করি তবে আল্লাহর আনুগত্য কে করিবে? আল্লাহ আমাকে দুনিয়ার উপর আমানতদারি বানাইয়াছেন। আর তোমরা আমাকে আমানতদার মানিতেছ না।তখন এক ব্যক্তি ঐ লোকটিকে হত্যা করার অনুমতি চাহিল। আবু সাইদ বলেন, আমার ধারণা ঐ ব্যক্তি খালেদ ইবনে অলিদ ছিলেন। কিন্তু হুজুর তাঁহাকে বারণ করিলেন। অভিযোগকারী লোকটি চলিয়া গেলে হুজুর বলিলেন, এই ব্যক্তির বংশে বা এই ব্যক্তির পরে, এমন কিছু সংখ্যক লোক হইবে, যারা কুরান পড়িবে কিন্তু তাহা কন্ঠনালী অতিক্রম করিবে না। ধর্ম হইতে তাহারা এমনভাবে বাহির হইয়া যাইবে যেমন ধনুক হইতে তীর বাহির হইয়া যায়। তাহারা মুসলমানদিগকে হত্যা করিবে এবং মূর্তিপূজক দিগকে অব্যহতি দিবে। যদি আমি তাহদিগকে পাইতাম তবে আদ জাতির মত অবশ্যই তাহাদিগকে হত্যা করিতাম। সহি বুখারী, বই-৫৫, হাদিস নং-৫৫৮
আল্লাহর এমনই করুণ দশা যে তার একমাত্র সত্য ধর্ম ইসলাম প্রচার করার জন্য তাকে তার অবাধ্য বান্দাদেরকে শুধুমাত্র খুন খারাবি, দোজখের আগুনের ভয় এসব দিয়েও যখন কাজ হচ্ছে না তখন তার নবীকে ঘুষ প্রদান করতে হয়। আর বলা বাহুল্য এ ঘুষ দিতে কিন্তু নিজেদের সম্পদ ব্যয় করতে হচ্ছে না, অন্যের লুট করা সম্পদ গণিমতের মালের নাম করে গ্রহণ পূর্বক তা দিয়েই কাজ সমাধা হয়ে যাচ্ছে। আল্লাহর এ ধরণের রহস্যময় আচরণ বোঝা বড় দায়। যাদেরকে আল্লাহ নিজেই বিভ্রান্ত করেছে, যাদের অন্তকরণকে সীল মেরে বন্দ করে দিয়েছে, তাদেরকে নানারকম হুমকি ধামকি দিয়েও ইসলামে আনতে না পেরে অবশেষে ঘুষের আশ্রয় নিতে হচ্ছে। আল্লাহর এ ধরনের করুণ ও অসহায় অবস্থায় তাকে আমাদেরও করুণা ও দয়া দেখানো ছাড়া কোন উপায় নেই। কেন এখানে আল্লাহর ঘুষ দেয়ার কথা বলা হচ্ছে? কারন আমরা জানি, মোহাম্মদ নিজ থেকে কোন কাজ করতেন না, সব কিছুই তিনি করতেন আল্লাহর নির্দেশে। সুতরাং তাঁর এ ঘুষ প্রদানের নির্দেশটি নিশ্চয়ই আল্লাহর কাছ থেকে এসেছে। উক্ত হাদিস থেকে আরও কিছু বিষয় খুব পরিষ্কার। তা হলো- মোহাম্মদের অনুসারীরা যে সব সময় মোহাম্মদের সম্পর্কে উচু ধারণা পোষণ করত তা নয়। যে কারনে তারা প্রকাশ্যে মোহাম্মদের এহেন কাজের প্রতিবাদ করছে। আরও বোঝা যায়, তার সাহাবীরা সব সময় যে মোহাম্মদের ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে তা গ্রহণ করত সেটা ঠিক নয়, তারা লুন্ঠিত ধণ সম্পদ তথা গণিমতের মাল পাওয়ার আশায় মোহাম্মদের দলে ভিড়েছিল। উক্ত হাদিসে দেখা যাচ্ছে উপস্থিত সকল আনসার (মদিনাবাসী) ও মক্কাবাসীরাই বিষয়টির সমালোচনা ও প্রতিবাদ করেছে তার মানে গণিমতের মালের আশায় মোহাম্মদের দলে যোগ দেয়া লোকের সংখ্যাই বেশী। একজন লোক (যে নাকি নিজেও মোহাম্মদের সাহাবি) তো মোহাম্মদের এ ধরণের অনৈতিক কাজ দেখে প্রকাশ্যে বলেছে- হে মোহাম্মদ! আল্লাহকে ভয় কর- যা প্রকারান্তরে মোহাম্মদের নবুয়ত্বকে চ্যলেঞ্জ করার সামিল। কেন সে মোহাম্মদকে আল্লাহকে ভয় করার জন্য বলেছে? কারন তার কাছে মনে হয়েছে মোহাম্মদ যা করল তা খুব অনৈতিক ও খারাপ কাজ। খারাপ কাজ একারনে যে আল্লাহ যদি সত্যি ইসলামকে সত্য ধর্ম ও মোহাম্মদকে তার মনোনীত রসুল গণ্য করে, সেই ইসলামে এ ধরনের অনৈতিক কাজের স্থান হতে পারে না, করতে পারে না কোন আল্লাহর রসুল এ ধরণের হীন কাজ। মোহাম্মদ এ ধরণের একটা হীন ও অনৈতিক কাজ করার কারনে উক্ত লোকটির মনে হয়েছে যে মোহাম্মদ সাময়িকভাবে আল্লাকে ভুলে গিয়ে এ ধরণের কাজ করেছে। সেকারনেই সে মোহাম্মদকে আল্লাহকে ভয় করার কথা বলে প্রকারান্তরে মোহাম্মদকে তওবা করতে বলেছে। আর বলা বাহুল্য, এ কথাগুলো বলে লোকটি মোহাম্মদকে ভুল শোধরানোর কথা বলেছে এবং কোনভাবেই আল্লাহ ও ইসলামকে অবমাননা করতে চায়নি, বরং তাদেরকে সমুন্নত করতেই চেয়েছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে শুধুমাত্র একজন লোক খালেদ বিন অলিদ প্রতিবাদ না করে অভিযোগকারী লোকটিকে তার এ ধরণের ঔদ্ধত্যের জন্য খুন করতে চেয়েছে। বোঝাই যাচ্ছে, অলিদ বিন খালিদ বিষয়টির গভীরে পৌছতে ব্যর্থ ও এটাকে মোহাম্মদকে অপমান করার সামিল গণ্য করেছে। এ থেকে মোহাম্মদের অন্ধ সাহাবীদের মন মানসিকতার স্তর বোঝা যায়। এক দিকে গণিমতের মালামালের জন্য লোভী একদল বর্বর আরব, অন্য দিকে মোহাম্মদের প্রতি অন্ধ কিছু বর্বর ভক্ত মোহাম্মদের পিছনে দল বেধেছে। মোহাম্মদও সেটা ভাল করেই জানেন আর জানেন বলেই তিনি তাদেরকে সুকৌশলে পরিচালিত করেছেন এবং তার প্রথম সফল যুদ্ধের প্রথমদিনেই তিনি আল্লাহর ওহীর মাধ্যমে লুন্ঠিত দ্রব্যাদি গণিমতের মালামাল রূপে বৈধ করে ফেলেছেন। এখানে আরও লক্ষ্যনীয়, মোহাম্মদ কিন্তু অলিদকে প্রতিবাদকারী লোকটিকে খুন করতে নিষেধ করেছেন। এটা তার অতীব দুরদর্শিতার নিদর্শন।তিনি বুঝতে পেরেছিলেন এ ধরণের কাজের জন্য সাথে সাথেই লোকটিকে খুন করলে তাতে তার সুনাম হানি হবে, উপস্থিত লোকজন মোহাম্মদের প্রতি আস্থা হারাতে পারে। কারন উপস্থিত আনসার ও কুরাইশদের পক্ষেই মূলত লোকটি কথা বলেছিল। সুতরাং তারা মোহাম্মদের দল ত্যাগ করতে পারে। সুচতুর মোহাম্মদ তাই লোকটিকে সাথে সাথে খুন করার কথা বলে নিজের বিপদ বাড়াতে চান নি। একই সাথে উপস্থিত লোকজন যাতে মোহাম্মদের ঘুষের মত অনৈতিক কাজের ব্যপারে বেশী সমালোচনা করতে না পারে তাই সাথে সাথেই তিনি সে ব্যবস্থাও করেন। বর্বর আরবগুলোকে সাথে সাথেই একটা কিচ্ছা তৈরী করে ভয় প্রদর্শন করেন ও অভিশাপ দেন।
উক্ত হাদিস থেকে আরও একটা বিষয় পরিষ্কার। তা হলো কেন মুসলিম প্রধান দেশগুলোতে দুর্নীতি, ঘুষ এসবের মাত্রা বেশী। উপরের হাদিস থেকে দেখা যাচ্ছে- মোহাম্মদ তার সাহাবীদেরকে শিক্ষা দিচ্ছেন ইসলামের স্বার্থে ঘুষ প্রদান সঠিক ও বৈধ। বাংলাদেশের ধর্মপ্রান মানুষ যারা সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে কর্মরত তারা আপাদমস্তক প্রায় ঘুষখোর ও নানা রকম অবৈধ পন্থায় উপার্জনে বিশেষ দক্ষ ও দ্বিধাহীন। তার কারন হলো তারা বিশ্বাস করে রসুলের দেখানো পথে যে- এভাবে উপার্জন করার পরে তার একটা অংশ যদি ইসলাম প্রচারের কাজে লাগানো হয় তাহলে তার সব অপরাধ মাফ। যেকারনে দেখা যাবে উচ্চ-নীচ সব ধরনের সরকারী কর্মকর্তা, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী এরা ব্যপকভাবে মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানাতে দান ধ্যান করে, হজ্জ করে, ফকির মিসকিনকে দান করে, ইসলামী জলসার আয়োজনে আর্থিক সহায়তা করে, ইসলামী সংগঠনগুলোকে নিয়মিত চাঁদা দেয় আর বলাবাহুল্য এর সবগুলোই ইসলাম প্রচার ও প্রসারের উপলক্ষ্য ও ফলত: তাদের যাবতীয় দুর্নীতি ও অপকর্ম জায়েজ। এত যে দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রচার প্রচারণা চালানো হচ্ছে তাতে কেন যে কোন কাজ হচ্ছে না, তা আশা করি এখন বোধগম্য। মোহাম্মদ নিজেই যেখানে ইসলাম প্রচারের জন্য লুঠ-পাট, খুন-খারাবি, যুদ্ধ, ঘুষ এসবকে জায়েজ করে গেছেন, তার উম্মতরাও তো সেটাই অনুসরণ করবে, সেটাই তো ইসলামের নির্দেশ। ঠিক একারনেই দেখা যায় অধিকাংশ অমুসলিম দেশ যেখানে প্রায় দুর্নীতি মুক্ত বা মাত্রা অনেক কম সেখানে প্রায় সব কটি মুসলমান রাষ্ট্র আপাদ মস্তক দুর্নীতিগ্রস্থ। আর এ দুর্নীতির জন্য মানুষের চেয়ে ইসলাম বেশী দায়ী বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে। খালি উপরে উপরে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সংগ্রাম করলে কি আর দুর্নীতি কমে? সমস্যার মূলে যেতে হবে আগে, তাহলেই না সমস্যা দুর হবে। এ ব্যপারে দলিল দস্তাবেজ সহ বিস্তারিত পরের অধ্যায়ে আলোচনা করা যেতে পারে।
কিন্তু মোহাম্মদের ইসলাম প্রচারের ব্যক্তিগত উদ্দেশ্য ছিল আরব রাজ্য প্রতিষ্ঠা, সেটা অনারব মুসলমানরা বুঝতে পারে না।মূলত: আরবদেরকে একত্রিত করে একটা শক্তিশালি আরব রাজ্য গঠন করাই ছিল তার ইসলামের মূল লক্ষ্য। আর সেকারনে তিনি তার তথাকথিত আল্লাহর বানী ছাড়াও কপটতার আশ্রয় নিতেন, আশ্রয় নিয়েছেন লুট-তরাজ, হত্যা-ধর্ষন, হুমকি ধামকির। আধুনিক যুগের বিভিন্ন দেশে যেসব একনায়ক দেখা গেছে বা এখনও যায় এদের প্রত্যেকেই ছিল মোহাম্মদের এ ধরণের কৌশলের একান্ত অনুসারী। হিটলার, স্টালিন, মাও সে তুং থেকে শুরু করে হালের সাদ্দাম হোসেন, গাদ্দাফি সবাই এ তালিকায় পড়ে। যা বলা বাহুল্য, আধুনিক যুগের রাজনীতির একটা বিশেষ বৈশিষ্ট্য। আরবকেন্দ্রিক এ রাজ্য বা সাম্রাজ্যই যে তার মূল লক্ষ্য ছিল তা কিন্তু এক পর্যায়ে মোহাম্মদ লুকান নি, তা প্রকাশ করেছেন সবার সামনেই আর তা করেছেন তখন যখন তিনি তার ক্ষমতা সুসংহত করে স্থায়ী ইসলামী আরব রাজ্যের ভিত্তি শক্তভাবে প্রতিষ্ঠা করেন। যেমন দেখা যাক নিচের হাদিস-
আবু হোরায়রা বর্ণিত, হুজুর বলিয়াছেন, এই খেলাফতের(শাসন) ব্যপারে সমস্ত মানুষ কুরাইশদের অধীন। সহি বুখারি, বই-৫৬, হাদিস নং-৭০০
আব্দুল্লা ইবনে ওমর বর্ণিত, হুজুর বলেন- শাসন কার্যের দায়ীত্ব চিরকাল কুরাইশদের হাতেই থাকবে, যতদিন তাদের দুইজন লোকই অবশিষ্ট থাকবে। সহি বুখারি, বই-৫৬, হাদিস নং-৭০৫
এসবের পরে কি আর বুঝতে বাকি থাকে মোহাম্মদের ইসলাম প্রচারের আসল মাহাত্ম কি ছিল? ঠিক এ তত্ত্বের ওপর ভিত্তি করেই আরবরা নিশ্চিন্তমনে দুনিয়ার সকল মুসলমানদের ওপর তাদের সাম্রাজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। তারা নিজেরা দুনিয়ার যত আকাম কুকাম(মদ, জুয়া, বেশ্যা সঙ্গম ইত্যাদি) করে দুনিয়ার বাকী সব মুসলমানদের সামনে গিয়ে ইসলামের সুমহান বানী প্রচারের কাজে কোটি কোটি ডলার লগ্নি করেছে যাতে তাদের এ সাম্রাজ্য চিরকাল বজায় থাকে। অনারব মুসলমানরা বুঝে না বুঝে এখনও পর্যন্ত অসভ্য আরবদের দাসত্ব করতে পেরে দারুন রকম পূলক অনুভব করে। তাদের এ লগ্নির কারনেই ইসলাম প্রচারের নামে মুসলিম দেশগুলোতে অসংখ্য টিভি, ওয়েবসাইট প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, দরিদ্র মূসলিম দেশে গড়ে উঠেছে হাজার হাজার মসজিদ, মাদ্রাসা, ইসলামী চরমপন্থি রাজনৈতিক দল। ফলও হাতে নাতে-বাংলাদেশের মত দেশে মাদ্রাসার সংখ্যা হয়েছে মাত্রারিক্ত, ইসলামী শিক্ষায় শিক্ষিত ছাত্র বের হচ্ছে প্রতি বছর লাখ লাখ, মেয়েরা দিন দিন বোরখার ভিতরে ঢুকছে, অভিজাত মুসলমানরা আরবদের আলখাল্লা গায় ও মাথায় পাগড়ি পরে নিজেকে আরব মনে করছে। একটাই উদ্দেশ্য- সারা দুনিয়ার সব মানুষ যেন সৌদি আরবে হজ্জ ও ওমরা করতে যায়, এর ফলে ওদের দেশের তেল ফুরিয়ে গেলেও সমস্যা নেই, হজ্জ ও ওমরা ব্যবসা করেই দিব্বি মজা ফুর্তিতে জীবন কাটানো যাবে। দরিদ্র মুসলিম দেশের মুসলমানরা জমি বাড়ী বিক্রি বা বন্দক রেখে, কঠোর পরিশ্রম করে জমা করা টাকা খরচ করে হজ্জ বা ওমরা করতে যাবে, সেই টাকায় আরবরা বসে বসে মজা করবে। আহা মোহাম্মদ সত্যিই খুব দুরদর্শী ছিলেন। উষর আরবের আরবদের প্রতি তার সীমাহীন ভালবাসার কারনে তার সৃষ্ট ইসলাম তার আরব উত্তরাধিকারীদের জন্য চিরস্থায়ী সুখ স্বাচ্ছন্দের ব্যবস্থা করে দিয়েছে।
পরিশেষে মোহাম্মদের উদ্ভট গল্প কিচ্ছার ছোট্ট আর একটি উদাহরণ দেয়া যেতে পারে, যেমন-
আবু হোরায়রা বর্ণিত, হুজুর বলিয়াছেন- আল্লাহ আদমকে সৃষ্টি করিলেন ও তাহার উচ্চতা ছিল ৬০( ষাট) হাত।………………..যে ব্যক্তিই বেহেস্তে প্রবেশ করিবে তাহার আকৃতি হইবে আদমের আকৃতির মত।তবে আদম সন্তানের উচ্চতা কমিতে কমিতে বর্তমান উচ্চতায় আসিয়াছে। সহি বুখারি, বই-৫৫, হাদিস নং-৫৪৩
আবু হোরায়রা বর্ণিত, হুজুর বলিয়াছেন- যে দল সর্বপ্রথম বেহেস্তে প্রবেশ করিবে তাহাদের চেহারা হইবে পূর্ণিমার রাত্রের চন্দ্রের মত…………………………………..তাহাদের স্ত্রীরা সবাই হইবে আয়ত ও কাল চক্ষু বিশিষ্টা হুর। সকলেই তাহারা আদি পিতা আদমের দেহাকৃতির ন্যায় ৬০ হাত দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট হইবে। সহি হাদিস, বই-৫৫, হাদিস নং-৫৪৪
৬০ (৯০ ফুট) হাত তথা ৯ তলা দালানের সমান উচ্চতা বিশিষ্ট বেহেস্তবাসি মানুষ তার মানে প্রত্যেকেই হবে এক একটি বিশাল দৈত্য, তাদের আকৃতি হবে পৃথিবীর বর্তমানে সবচাইতে বিরাট প্রানী নীল তিমির সমান আকৃতির।হাদিসে তাদের স্ত্রী অর্থাৎ হুরদের আকৃতি কেমন হবে তা পরিষ্কার বলা নেই। তবে তা নিশ্চয়ই ৬০ হাতের কাছাকাছি উচ্চতারই হবে ধরে নেয়া যায়। এখন কোটি কোটি বিশাল দেহী বেহেস্তবাসীরা বেহেস্তে যখন বিশাল দেহী হুরদের সাথে যৌনক্রিড়া করবে একই সাথে(কারন যৌন ক্রিড়া করা ছাড়া বেহেস্তে তাদের করনীয় কিছু নেই), তা একটা দেখার মত দৃশ্য হবে। এছাড়া পৃথিবীর প্রথম মানব আদমেরও দৈর্ঘ্য ছিল ৯০ ফুট যা থেকে কমতে কমতে আধুনিক মানুষ গড়ে ৬ ফুটের কাছাকাছি এসেছে। সুতরাং যারা আদিম ফসিল খুজে বেড়ায় তাদের জন্য নোবেল পুরস্কার পাওয়ার একটা সুযোগ আছে। যদি কোন দিন তারা ৯০ ফুট বা তার কাছাকাছি কোন মানব ফসিল খুজে পায় তা যেমন মোহাম্মদের কিচ্ছার সত্যতা প্রমান করবে একই সাথে নির্ঘাত তা তার জন্য চাই কি ডবল নোবেল পুরস্কার পাওয়ার পথ করে দেবে। আমরা আশা করছি কোন এক মহা প্রতিভাবান ফসিল সন্ধানী খুব তাড়াতাড়ি এ ধরণের ফসিল খুজে পেয়ে আমাদেরকে আশ্বস্থ করবেন। যদি নাও পাওয়া যায়, তাতেও ক্ষতি নেই বলেই মনে হয়, কারন ইসলামী বিজ্ঞানীরা সম্ভবত: ইতোমধ্যেই গোটা দুনিয়া ব্যপী যে সব অতিকায় ডাইনোসরদের কংকাল খুজে পেয়েছে তাদেরকে আদি মানব হিসাবে প্রমান করার জন্য আদা জল খেয়ে লেগে পড়েছে যার ফলাফল সম্ভবত খুব তাড়াতাড়ি ইসলামি টিভি গুলোতে স্বাড়ম্বরে প্রচার করা হবে। সুতরাং পাঠক বৃন্দকে আর কিছুকাল অপেক্ষা করা ছাড়া গতি নেই।