নাস্তিকতার নিত্যনতুন নবীগণ

দীর্ঘ অনলাইন-জীবনে লক্ষ্য করেছি, থেকে থেকেই উদয় হয় একেকজন নাস্তিকীয় নবীর, যাদের প্রত্যেকেরই উদ্দেশ্য এক ও অভিন্ন – ‘পথভ্রষ্ট’ নাস্তিকদের হেদায়েত করে সিরাতুল মোস্তাকিমে নিয়ে আসা।

ধর্মীয় নবীদের মতোই নাস্তিকতার নবীরাও বিশ্বাস করে, একমাত্র সত্য পথের সন্ধান জানে শুধু তারাই এবং সেই সত্যটি প্রচারের মাধ্যমে ‘বেপথু’ নাস্তিকদের নসিহত করাটা তারা দায়িত্ব হিসেবে নিয়ে থাকে।
কোনও ধর্মীয় নবী যেভাবে অন্য সমস্ত মতধারা নাকচ করে দিয়ে নিজের ‘একমাত্র’ সত্য মতবাদ প্রচার করে, ঠিক তেমনিভাবেই নাস্তিকতার নবীরাও নাস্তিকতা প্রচারের ক্ষেত্রে শুধু তাদের অনুসৃত তরিকাটিই একমাত্র হালাল ও ছহীহ্ তরিকা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে এবং অন্য তরিকাগুলো কেন হারাম, তা প্রমাণ করতে মরিয়া।

স্যরি টু সে, এটা এক ধরনের কূপমণ্ডুকতা। কারণ নাস্তিকতা প্রচারের সর্বজনীন ও সর্বজনগ্রাহ্য নির্দিষ্ট কোনও তরিকা নেই, থাকতে পারে না। যেহেতু সব মানুষ এক ছাঁচে গড়া নয়, তাই প্রতিটি মানুষের ক্ষেত্রে একটি ধন্বন্তরি তরিকাই প্রযোজ্য বলে মনে করাটা বেকুবি।

আমি তরিকা-বৈচিত্র্যে আস্থাবান। যে কোনও নাস্তিক তার নিজস্ব সামর্থ্য, জ্ঞান, অবস্থান ও পরিবেশকে বিবেচনায় এনে অনলাইনে সৎ প্রচারণা চালাতেই পারে। তবে তার প্রচারের ধরনটি যে অন্য সব নাস্তিকের পছন্দ হবে, তা কিন্তু নয়।

তাই বলে “আমি যেহেতু এই তরিকা অনুসরণ করি না ও পছন্দ করি না, অতএব তা ভুল ও কোনওমতেই গ্রহণযোগ্য নয়” জাতীয় বালখিল্য ও বদ্ধমনা অবস্থানই বরং প্রবলভাবে আপত্তিকর, ও ক্ষতিকরও বটে।
তবে এই নব নব নবুয়তীর ভেতরেও আমি বিনোদন খুঁজে পাই। কারণ, প্রায়শই লক্ষ্য করে দেখেছি, এই নবীদের কাছে ধর্মকারী যেন সেই বৃদ্ধ ইহুদি রমণী, যে নাকি নবী মুহাম্মদের যাতায়াতের পথে কাঁটা বিছিয়ে রাখতো