যে যত বড় দূর্নীতবাজ তার তত বেশি করে ধর্ম

রাজনীতিতে ‘ইসলাম কার্ড’ আগে পরে সবাই খেলেছে। জামাত ইসলাম সহ অন্যান্য ধর্মভিত্তিক দলগুলোর একক হাতিয়ার ইসলাম। কিন্তু প্রথমে জিয়া পরে এরশাদ হয়ে বিএনপি-আওয়ামী লীগ সবাই খেলেছে এই কার্ড। ৯৬ এর নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ প্রথমবার প্রত্যক্ষভাবে ‘ইসলাম কার্ডে’র শরনাপন্ন হয়। কিন্তু বর্তমানে আওয়ামী লীগ সরকার এবং তার প্রধানমন্ত্রী বিপদজনক মাত্রায় ‘ইসলাম কার্ডে’র ব্যবহার করছেন, ঠিক যেমনটি করেছিল গত বিএনপি জামাত জোট সরকার- বাংলা ভাই কার্ড খেলে। ‘মিডিয়ার সৃষ্ট’, সহ নানান কিছু বলে তারা বাংলা ভাই-জেএমবির ইস্যুকে উপেক্ষা করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। বিএনপি শেষ পর্যন্ত বেরিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছিল এবং অন্তত তখনকার মত খুনী-বোমাবাজ জঙ্গী গোষ্ঠীর কার্যক্রম ও নেটওয়ার্ক গুড়িয়ে দিয়েছিল। কিন্তু এই সরকার এখনো পর্যন্ত ভয়াবহ মাত্রায় ‘ইসলাম কার্ড’ খেলেই যাচ্ছে- নিহত মানুষদের দোষ ধরে, তা সমস্বরে প্রচার করে নৃশংস এক খুনী গোষ্ঠীকে আড়াল করার চেষ্টা হচ্ছে। কোনো খুনের তদন্ত এগোচ্ছে না- পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে, সরকার ও তার বাহিনী খুনীর কাছ পর্যন্ত যেতে চাইছে না। দেশে এক ভয়ানক ভীতি ও আতঙ্কের পরিবেশ বিরাজ করছে। এক কথায় বললে- খাদের কিনারে দাঁড়িয়ে আছে দেশ।

অনেক মানুষকেই দেখছি বিভ্রান্ত, আশাহত। তারা আওয়ামী লীগের কাছ থেকে এরচেয়ে ভাল কিছু আশা করেছিলেন। তাদের মনের মধ্যে যে অসাম্প্রদায়িক প্রগতিশীল আওয়ামী লীগের চেহারার কাঠামোটি দাঁড়িয়েছিল তা ঝুরঝুর করে ঝরে পড়ছে। কেউ কেউ অবাক, ব্যাখ্যা খুঁজে পাচ্ছেন না।

ব্যাখ্যা খুব পরিষ্কার, অবাক হওয়ার তেমন কিছুই নেই। যে যত বড় দূর্নীতবাজ তার তত বেশি করে ধর্মের শরনাপন্ন হতে হয়। দূর্নীতিবাজ এরশাদ কেন ইসলাম ইসলাম বলে মুখে ফেনা উঠিয়ে ফেলতো? কারণ স্পষ্ট, সে তার কুকীর্তি আড়াল করে ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতে চাইতো। আজকের আওয়ামী লীগের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে। ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের পর তার দ্বিতীয় দফার শাসনামলে দূর্নীতি-লুটপাটের এমন মচ্ছব শুরু হয়েছে যে শুধুমাত্র কথিত উন্নয়ন কার্ড নিয়ে মানুষের সামনে দাঁড়ানোর আত্মবিশ্বাস সে হারিয়ে ফেলেছে। আর তাই পাশাপাশি ‘ইসলাম কার্ড’ টিকেও কোনোভাবেই হাতছাড়া করতে চায় না সে। যেকোনো লুটপাটকারী গণবিরোধী শাসকের একই পরিণতি হবে- এ এক অনিবার্যতা।