যারা যারা বাংলাদেশের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম দেখতে চান, তারা কি আদৌ তা চান?
আমি তো চাই বাংলাদেশকে ইসলামী রাস্ট্র ঘোষনা করা হোক, দেশে শরিয়া আইন চালু করা হোক, কুরআনের আইনে দেশ চলুক।
আসুন আমরা দেখে নেই, বাংলাদেশকে ইসলামী রাস্ট্র ঘোষনা করা হলে কি কি পরিবর্তন আসবে।
১) গান বাজনা, নাটক, সিনেমা, সম্পূর্ণরূপে বন্ধ। টিভি চ্যানেলে শুধু ইসলামি অনুষ্ঠান ও নিউজ থাকবে।
২) পহেলা বৈশাখ, পহেলা ফাল্গুন, নবান্ন উৎসবের মত সব ধরনের বাঙালি অনুষ্ঠান বন্ধ।
৩) ভ্যলেন্টাইন্স ডে, রোজ ডে ইত্যাদি বে-শরিয়তি দিবস পালন করা বন্ধ।
৪) বাংলাদেশের কোন জাদুঘরে মূর্তি, ছবি জাতীয় কিছু থাকতে পারবে না, সব ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিতে হবে।
৫) বাংলাদেশে যত ভাস্কর্য, যেমন স্মৃতিসৌধ, অপরাজেয় বাংলা, শহীদ মিনার ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিতে হবে। শিখা অনির্বাণ থাকবে না।
৬) ফেসবুক, টুইটারের মত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থাকবে না। থাকলেও কোন বে-শরিয়তি বিষয় শেয়ার করলে শরিয়া আইন অনুযায়ী ব্যাবস্থা নিতে হবে।
৭) জেনাকারী, অপরাধী, নাস্তিকদের-মুরতাদদের জনসম্মুখে ফাঁসি কার্যকর করা হবে। চুরি – ডাকাতি করলে হাত কেটে দেয়া হবে। ধর্ষণকারীকে পাথর ছুঁড়ে হত্যা, ধর্ষিতা চারজন চাক্ষুস সাক্ষী জোগাড় করতে না পারলে জেনার অপরাধে জনসম্মুখে পাথর ছুঁড়ে হত্যা।
৮) সমস্ত অমুসলিমদের নিয়মিত জিজিয়া কর দিয়ে বাংলাদেশে থাকতে হবে অন্যথায় শরিয়া আইন মোতাবেক ব্যাবস্থা নেয়া হবে।
৯) আইন আদালত, ভোট , সংবিধান, গনতন্ত্র বলে কিছু থাকবে না। একজন খলিফা নির্বাচিত করা হবে, বিভিন্ন স্থানে শরিয়া আদালত থাকবে। তারাই কুরআন ও শরিয়া আইন অনুযায়ী ব্যাবস্থা নিবেন।
১০) মেয়েরা স্বামী অথবা পিতার অনুমতি ছাড়া বাইরে বের হতে পারবে না। বাইরে বের হলে সাথে অভিভাবকের সাথে বের হতে হবে। অন্যথায় যৌন নির্যাতন অথবা ধর্ষণের শিকার হলে মেয়েকেই দোষী সাব্যস্ত করা হবে।
১১) মেয়েরা বাইরে কাজ করতে পারবে না,গাড়ি চালাতে পারবেনা। স্বামীদের কথা না শুনলে স্বামী স্ত্রীকে প্রহার করতে পারবে, এতে স্বামীর কোন বিচার হবেনা। বাবা এবং স্বামী, কন্যা অথবা স্ত্রীকে খুন করে ফেললে তাদের ফাঁসি হবেনা, ব্লাড মানি দিয়ে বেকসুর খালাস পাওয়া সম্ভব।
১২) মহিলারা পাতলা পোশাক পরতে পারবে না।
মহিলাদের পাতলা পোশাক পরা অপরাধ তুল্য। যে মহিলা পাতলা পোশাক পরে তার দেহের বৈশিষ্ট্য দেখাবে অথবা অন্যের প্রতি হেলে পড়বে অথবা অন্যকে তার দিকে হেলে পড়তে দিবে সেও এই পর্যায়ে পড়বে।
-শারিয়া আইন ডবলু ৫২.১
১৩) খৎনা একেবারে বাধ্যতামূলক। পুরুষ এবং মহিলা উভয়ের জন্যে। পুরুষদের জন্যে খৎনা হবে পুং জননেন্দ্রিয়ের আবরক ত্বক কর্তন করা। মহিলাদের খৎনা হবে ভগাঙ্কুরের আবরক ত্বক ছেদন দ্বারা।
-শারিয়া আইন ই ৪.৩ (উমদাত আল সালিক)
১৪) মেয়েরা সেলফি তুলতে পারবেনা, সামাজিক মাধ্যমে মুখমণ্ডল অথবা শারীরিক গঠন প্রকাশ পায় এমন ছবি পোস্ট করতে পারবেনা।
১৫) কোন ধরনের পতিতালয় থাকবে না, ছেলে মেয়েদের বিয়ের কোন নির্দিষ্ট বয়স থাকবে না। ৫০ বছরের বৃদ্ধ ৬ বছরের মেয়েকেও মোহরানা প্রদানের মাধ্যমে বিয়ে করতে পারবে অভিভাবকের অনুমতি নিয়ে।
আরো অনেক পরিবর্তন আসবে, সময় এবং কালির অভাবে লিখতে পারলাম না।
আশা করি যারা যারা রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম চান, তারা এর পাশাপাশি বাংলাদেশকে ইসলামি রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে দাবি জানান এবং শরিয়া আইনের শাসন কায়েম করুন।
সবাই রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম চায়, কিন্তু বাংলাদেশে শরিয়া আইন চায় না কেন এটা একটা বড় প্রশ্ন। কারন শরিয়া আইন আসলে যেভাবে ধর্মকে ঢাল হিসেবে ব্যাবহার করত, সেটা আর সম্ভব হবে না। তখন সবার অবস্থা হবে ছেড়ে দে মা কেঁদে বাচি।
বাংলাদেশের মুসলমানরা হল সুবিধাবাদী টাইপের, গাছেরটাও খাবে, তলারটাও কুড়োবে।
বাংলাদেশে শুধু রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম না, শরিয়া আইনেরও শাসন চাই।