ফিনল্যান্ডে এ বছর ২১ ঘন্টা রোজা পালন হচ্ছে। সেহরি এবং ইফতারের মাঝে এক-দেড় ঘন্টার ব্যবধান থাকছে। ৫০ লক্ষ অধিবাসীর মধ্যে ১ লক্ষ অভিবাসী মুসলিমের বাস ফিনল্যান্ডে। তারা ভর দুপুরে রোজা ভেঙ্গে ইফতার করছেন! কয়েক বছর আগে মুসলিমদের বিশিষ্ট ইমামরা এই অঞ্চলের মুসলিমদের নিকটবর্তী মুসলিম দেশের ইফতারের সময় মান্য করে রোজা পালন করতে ফতোয়া দিয়েছিলেন। বলাই বাহুল্য তাদের এই ফতোয়া মনগড়া। কেননা দিনের বেলা পানাহার ইসলামী রোজায় হারাম। স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশগুলোতে রাতের বেলাতেও সূর্য উঠার কথা ইসলামেরআল্লাহর জানা না থাকায় এই গলদটা বেধেছে। কিন্তু আশ্চর্য যে মানুষ কতখানি নিজের জ্ঞান-বুদ্ধি ধর্মের কাছে বন্ধক রাখলে এতবড় গড়বড় দেখেও মনে প্রশ্ন জাগে না! যদি স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশগুলোর ফতোয়া গ্রহণযোগ্য হয় তাহলে অন্যান্য অঞ্চলের লোকজন দিনের বেলা পানাহার করে রাতের বেলা রোজা পালন শুরু করতে বাধা কোথায়?
স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশের কথা থাক। বঙ্গ দেশের এক ডাক্তার ইউটিউবে মুসলিমদের রোজায় সুস্থ থাকার পরামর্শ দিতে গিয়ে বলছেন, রোজা রাখার কারণে পাকস্থলি দীর্ঘ সময় কোন কাজ করে না বলে দিন শেষে ইফতারে যা খাওয়া হয় তা পরিশোধন করতে পাকস্থলির কিছুটা বেগ পেতে হয়। তাই ইফতারে কিছুতে কঠিন হজম হতে দেরী হয় এমন কিছু খাওয়া উচিত না। এছাড়া রোজা রাখার কারণে রক্তে চিনির পরিমাণ কমে যায়, শরীরের পানিশূন্যতা দেখা দেয় তাই ইফতারে বেশি করে গ্লুকোজ এবং পানিযুক্ত খাবার খাওয়া উচিত।… তারপরই দাড়িঅলা ডাক্তার হাদিস থেকে বললেন, আল্লার নবী বলেছেন পাকিস্থলী কিছুটা খালি রেখে সব সময় খাবার খেতে, সোবাহাল্লাহ!…
বিনোদন এখানেই শেষ না, এরপর তিনি বললেন, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিসের রোগীরা অবশ্যই একজন ভাল ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে রোজা রাখবেন। রোজা রাখা অবস্থাতে ইনহেলাল, ইনসুলিন গ্রহণ করলে রোজা ভঙ্গ হবে না…। অর্থ্যাৎ বঙ্গদেশের ডাক্তাররা চিকিৎসা পেশার সঙ্গে মুফতির দায়িত্বও পালন করে থাকেন! নিজের মুখেই রোজা রাখলে শরীরের কি কি সমস্যা হতে পারে তার দাওয়াই দেয়ার সময়ও এদের মাথাতে আসে না রোজা কি করে শরীরের জন্য উপকারী হয়? মানব সভ্যতার এ এক ট্রাজেডি! প্রতি নয়ত বিশ্বাস বাস্তবতার সঙ্গে সাংঘর্ষিক হতে দেখেও এরা এতখানি অন্ধ দাসত্ব বহন করে চলে…।
ইজমা, কিয়াস হচ্ছে কুরআন-হাদিসে যার সমাধান নেই তা আলেমরা বসে আলোচনা করে সমাধান করবেন। ইসলাম যেখানে ‘পরিপূর্ণ জীবন বিধান’ সেখানে কুরআন-হাদিসে কিছু খুঁজে না পাওয়াটা হাস্যকর নয় কি? এই যে ইজমা কিয়াসের মাধ্যমে ফতোয়া দেয়া হয় এসব তো মনগড়া। কুরআন কি বলেছে স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশে দিনের বেলা সূর্য মাথার উপর থাকলেও ইফতার করা যাবে? বলেনি। আসলে ইজমা-কিয়াস হচ্ছে ইসলামের ফাঁক-ফোকড়গুলো ধামাচাপা দেয়ার কৌশল। তবু দিনভর চিল্লাতে হবে- ইসলাম হচ্ছে পরিপূর্ণ জীবন বিধান!