ঘোষণা: বিভিন্ন বিষয়ে নতুন নতুন মজাদার শব্দের আলাদা একটি ব্লগই খোলা হয়েছে – দুষ্টু শব্দ। তার একটি ফেসবুক পাতাও আছে।
#
ধর্মকারীর পোস্ট বা শিরোনামে মাঝেমাঝেই পূর্বে অব্যবহৃত ও একেবারেই নতুন কিছু বাংলা শব্দ প্রয়োগ করা হয়। লক্ষ্য করা গেছে, সেসবের কিছু কিছু বেশ জনপ্রিয়তা ও প্রসার পেয়েছে। ধর্মকারী প্রবর্তিত ও প্রচারিত সেই শব্দগুলোর একটি তালিকা:
১.
ঈমানদণ্ড
(‘ঈমান’ ও ‘মানদণ্ড’-এর মিশ্রণে দ্ব্যর্থবোধক এই শব্দ)
২.
ভগবানেশ্বরাল্লাহ
(হিন্দু, খ্রিষ্টান ও মুসলমানদের god-গুলোকে এক নামে ডাকা)
৩.
ফটোমাস্তানি
(ফটোশপ বা অনুরূপ প্রোগ্রাম ব্যবহার করে ছবি নিয়ে নানাবিধ এডিটিং)
৪.
ধর্মানুনুভূতি
(বিশ্লেষণের প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না)
৫.
পিছ-কাম
(Anal sex বিষয়ে ‘ইছলাম ও পিছ-কাম’ নামের পোস্টে)
৬.
গুচ্ছকাম
(Group sex অর্থে)
৭.
(হেঁটমুণ্ডু) ঊর্ধ্বপোঁদ
(সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়ের ‘হেঁটমুণ্ডু ঊর্ধ্বপদ’-কে একটু বিকৃত করে নামাজীদের সিজদাসনের বর্ণনা)
৮.
আব্রাহাম্মক
(আব্রাহাম ও আহাম্মক-এর সন্ধি। Abrahamic religions-এর অনুবাদ – আব্রাহাম্মক ধর্মগুলো)
৯.
বল্দার্গু/বৃষবিষ্ঠা
(ইংরেজি bullshit-এর বাংলা এই প্রতিশব্দ দু’টির আবিষ্কর্তা: হাঁটুপানির জলদস্যু)
১০.
ঊনমৃত্যু (অভিজ্ঞতা)
(Near-death experience-এর বঙ্গানুবাদ)
১১.
মুরাদ টাকলা
(
দিগম্বর পয়গম্বর-এর যুগান্তকারী আবিষ্কার। তাঁর বানানো একটি পোস্টারে এই শব্দবন্ধটি প্রথম ব্যবহার করেন তিনি। ফেসবুকে প্রকাশের পরেই সেটি
৩০.০৮.১২ তারিখে প্রকাশিত হয় ধর্মকারীতে। এর পরে বাংলিশে লেখা বাণীর আক্ষরিক উচ্চারণ ও তার বঙ্গানুবাদের এই ধরনটিকে ধর্মকারীতে “মুরাদ টাকলা” হিসেবে প্রচার করা হয়েছিল
০৬.১১.১২,
০২.১২.১২ এবং
২৪.১২.১২ তারিখে। পরবর্তীতে “মুরাদ টাকলা” শব্দবন্ধটি অবিষ্কারের প্রমাণহীন দাবিদারদের উদয় হতে থাকে, যদিও তাদের কেউই ধর্মকারীর আগে কোথাও শব্দবন্ধটি ব্যবহারের রেকর্ড দেখাতে সক্ষম হয়নি। “মুরাদ টাকলা”-র আবিষ্কারক নিশ্চিতভাবেই দিগম্বর পয়গম্বর এবং সেটির প্রচারে ও প্রসারে প্রাথমিক ভূমিকা রেখেছে ধর্মকারী।)
১২.
ধর্মর্ষকামী
(ধর্ম ও মর্ষকামী একত্র করে বানানো। অর্থ – ধর্মের প্যাঁদানি খেয়েও যারা ধর্মে মুগ্ধ।)
১৩.
ধর্মকবলিত, ধর্মদুর্গত, ধর্মপীড়িত, ধর্মাক্রান্ত, ধর্মজর্জরিত, ধর্মক্লিষ্ট…
(বন্যাকবলিত, রোগপীড়িত, ভূমিকম্পদুর্গত জাতীয় দুরবস্থাসূচক বিশেষণগুলোর অনুকরণে বানানো)
১৪.
ব্ল্যাসফিমেরিক
(ব্ল্যাসফেমি ও লিমেরিক-এর সন্ধি)
১৫.
সমকওমী (মাদ্রাসা)
(বিশ্লেষণের প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না। ধর্মকারী স্থগিত থাকাকালে ফেসবুকে প্রকাশিত।)
প্রথম ব্যবহৃত: ১৩.০৫.১৩১৬.
বিগ্যান, বিগ্যানী, গ্যান, গ্যানী
(ধর্মভিত্তিক জ্ঞান ও বিজ্ঞানকে জ্ঞান ও বিজ্ঞান বলার অর্থ প্রকৃত জ্ঞান ও বিজ্ঞানকে অসম্মান করা। তাই এই বিকল্প।)
প্রথম ব্যবহৃত: ১১.১২.১১১৭.
ধর্মবাজ, ইসলামবাজ, ইছলামবাজ
(ধর্মব্যবসায়ী অর্থে)
প্রথম ব্যবহৃত: ২৭.১০.০৯
১৮.
ধর্মপচারক
(ধর্মপ্রচারক থেকে র-ফলা তুলে দিয়ে বানানো)
প্রথম ব্যবহৃত: দিন-মাস মনে নেই, তবে ২০১০ সালে
২১.
ধর্মপোন্দন
(ধর্মপ্যাঁদানির ভদ্র রূপ)
প্রথম ব্যবহৃত: ০৫.০৩.১১২২.
শান্তিকামী
(না, শব্দটি নতুন নয়, তবে তার নতুন অর্থ বের করা হয়েছিল: “একদল ইসলামী দাবি করে থাকে, তারা শান্তিকামী। ভেবে দেখলাম, কথাটা আসলেও সত্য। বুঝিয়ে বলি: ‘শান্তিকামী’ শব্দে “কামী”-র উৎপত্তি ‘কাম’ অর্থাৎ সেক্স থেকে। মানে, শিশুকামীরা যেমন শিশুদের সঙ্গে সেক্স করে, তেমনি শান্তিকামী ইসলামীরা সেক্স করে শান্তির সঙ্গে। একেবারে কথ্য ভাষায় বললে: ‘ইসলামীরা শান্তিরে োদে।’ সে অর্থে ইসলামীরা সত্যিকারের শান্তিকামী।”)
প্রথম ব্যবহৃত: ০৬.০৭.১১২৩.
চটিপতি
(বাংলা চটিজগতের প্রাণপুরুষ রসময় গুপ্তের নতুন উপাধি – ‘কোটিপতি’-র অনুকরণে বানানো)
প্রথম ব্যবহৃত: ২৮.০২.১৪২৪.
(বাণী) পীড়ন্তনী
(যে বাণী পীড়নমূলক। ‘বাণী চিরন্তনী’-র অনুকরণে বানানো)
প্রথম ব্যবহৃত: ০৩.০৯.১২২৫.
ঈমানদাঁড়
(অর্থ অনায়াসবোধ্য। শব্দটির আবিষ্কর্তা হাঁটুপানির জলদস্যু)
প্রথম ব্যবহৃত: ০৬.০১.১২
২৬.
ইমামদোবাজী
(ইমামের মামদোবাজী। ধর্মকারী স্থগিত থাকাকালে ফেসবুকে প্রকাশিত।)
প্রথম ব্যবহৃত: ২৫.১২.১৩
২৭.
হোমো ল্যাদিয়েন্স
(ছাগু। হোমো স্যাপিয়েন্স হয়েও ল্যাদানি-ক্ষমতার অধিকারী। ধর্মকারী স্থগিত থাকাকালে ফেসবুকে প্রকাশিত।)
প্রথম ব্যবহৃত: ১৮.০১.১৪
২৮.
পাদত্যাগ
(দুষিত বায়ুত্যাগ)
প্রথম ব্যবহৃত: ০৯.০৫.১৪
২৯.
বিজ্ঞানহারামী
(বিজ্ঞানের সমস্ত অবদান জীবনের প্রতিটি স্তরে এবং প্রতিটি মুহূর্তে সর্বোতভাবে ভোগ ও ব্যবহার করেও বিজ্ঞানকে অস্বীকার, বিজ্ঞানের প্রতি নিন্দাজ্ঞাপন ও শত্রুতাপূর্ণ মনোভাব পোষণ করা। তুলনীয় শব্দ: নিমকহারামী।)
প্রথম ব্যবহৃত: ৩০.০৫.১৪
৩০.
বেশ্যাহেস্ত
(হুরি তথা বেশ্যাময় বেহেস্ত। শব্দটির উদ্ভাবক দাঁড়িপাল্লা।)
প্রথম ব্যবহৃত: ১১.০৬.১৪
৩১.
ধর্মাতুল কৌতুকিম
(ধর্ম বিষয়ক কৌতুক। ‘সিরাতুল মুস্তাকিম’ থেকে অনুপ্রাণিত।)
প্রথম ব্যবহৃত: ০১.১২.০৯
৩৩.
ইব্রাধোন
(নবী ইব্রাহিম তিন ধর্মের জনক, অর্থাৎ হারাধনের দশটি ছেলের মতো ইব্রাধোনের তিনটি ছেলে। শব্দটির জনক দাঁড়িপাল্লা)
৩৪.
(পানি) পীরন্তনী
(পীরের পড়া পানি। বাণী চিরন্তনীর আদলে।)
৩৫.
প্রোপাগাণ্ডু
(প্রোপাগান্ডা ও গাণ্ডু – এই দুই শব্দ মিলিয়ে বানানো। বিশেষ্য ও বিশেষণ হিসেবে ব্যবহার্য। যেমন: ইছলামী প্রোপাগাণ্ডু, প্রোপাগাণ্ডু মুর্খ।)
৩৬.
মোmean-minded
(মোমিন ও mean-minded-এর সন্ধি)
৩৭.
ইছলাম্পট্য
(ইছলাম অনুমোদিত লাম্পট্য)
৩৮.
যায়েজtify
(অপকর্মকে যায়েজ বানানো অর্থাৎ justify করা)
৩৯.
হিজরতিক্রিয়া
(নবীজির মদীনাগমনকে হিজরত বলা গেলে তার নারীগমনকে হিজরতিক্রিয়া বলাই যায়)
৪০.
ঈদ-উল-পূজহা
(কোরবানির ঈদ ও দূর্গা পূজা প্রায় একই সময়ে অনুষ্ঠিত হওয়া উপলক্ষে)
৪১.
(ইসলামী) বিজ্ঞাপর্ন
(বিশ্লেষণের প্রয়োজন নিশ্চয়ই নেই! শব্দটির উদ্ভাবক দিগম্বর পয়গম্বর)
৪২.
দাস-রাফুল মাখলুকাত
(সাগ্রহে স্বেচ্ছাদাসত্ব বেছে নেয়া মানুষ। বিশ্বাসীরা যেমন।)
৪৩.
দুঃশব্দ
(তুলনীয় শব্দ – দুঃস্বপ্ন। যে শব্দ বিকট, কর্ণবিদারী, অসহনীয়। উদ্ভাবক – ধর্মপচারক-এর বোন।)
৪৪.
বোকচুদুল মো’মেনীন
(‘মোকছুদুল মো’মেনীন’ বাস্তবে)
৪৫.
হুরুত্বপূর্ণ
(জিহাদে শহীদ হওয়া একটি হুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প। বোঝা গেল?)
…
————————————————————————–১. মহাউন্মাদ
২. মহাম্যাড
৩. মহাবদ
৪. মহাম্মক
৫. আল্যাফাক
৬. মগানবী
ওপরোক্ত ছ’টি শব্দের প্রচার ও প্রসারে ধর্মকারী নিরলস ভূমিকা রাখলেও এসবের উদ্ভাবন ও প্রথম ব্যবহার ধর্মকারীতেই হয়েছে, সে কথা নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না।