পৃথিবীর আয়ু সম্পর্কে স্টিফেন হকিং

আর মাত্র ৩০ বছরের মধ্যে পৃথিবীর পাত গুটিয়ে ভাগতে হবে মানব সভ্যতাকে! স্টেফিন হকিং বলেছেন, এটা সায়েন্স ফিকশন নয়, বিজ্ঞানের ফ্যাক্টস। আর কোন উপায় নেই। দ্রুত কেটে পড়তে হবে পৃথিবী ছেড়ে। মানব সভ্যতাকে গ্রহান্তরে উপনিবেশ খুঁজতে হবে। হকিং বলছেন আগামী ৩০ বছরের মধ্যে পৃথিবীর চাঁদে এবং আগামী ৫০ বছরের মধ্যে মঙ্গল গ্রহে মানব জাতিকে আশ্রয় নিতে হবে- এর আর কোন বিকল্প নেই।

ছুটে আসছে গ্রহাণু, বিশাল বিশাল পাথরের চাড়- তার একটা পৃথিবীর বায়ুমন্ডল ভেদ করে প্রবেশ করলেই এই ধরনী ধূলিস্যাৎ হয়ে যাবে! পৃথিবীর খুব কাছে থাকা (নিয়ার-আর্থ অবজেক্ট) গ্রহাণু বা অ্যাস্টারয়েড পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে একের পর এক…। এর অর্থ হচ্ছে আগামী ৩০ বছরে চাঁদে বসবাসের উপযোগী করে গড়ে তোলার আগেই আমাদের ভবলীলা সাঙ্গ হয়ে যেতে পারে। হতে পারে এই মুহূর্তেই ধেয়ে আসা একটা গ্রহাণুর আঘাতে সব স্তব্ধ করে দিতে। হকিং বলছেন এই মহাজাগতিক ধ্বংস যেহেতু খুব নিকটে তাই চাঁদে উপনিবেশ করতেই হবে।

সেই লক্ষ্যে কাজও শুরু হয়েছে। পৃথিবী ধ্বংস হয়ে গেলেও তাই মানব জাতির টিকে রইবে আরো দশ লক্ষ বছর চাঁদ, মঙ্গল এবং পৃথিবী থেকে ৪ আলোকবর্ষ দূরের আলফা সেনটাওরি-বি’তেও। কিন্তু দ্রুতই আমাদের সময় ফুরিয়ে আসছে। মাত্র ৩০ বছরের মধ্যে মানব জাতিকে পৃথিবীকে ত্যাগ করতে হবে! সত্যিই কি এতখানি সিরিয়াস ব্যাপার এটা? হকিংয়ের কথাতে জোর দিয়ে আরেক বিশিষ্ট পদার্থবিজ্ঞানী অ্যালান ফিৎজসিমন্স বলেছেন, ‘‘আমাদের ঘাড়ের ওপর হামলে পড়ার জন্য যে কত গ্রহাণু রয়েছে, সেই সংখ্যাটাই আমাদের এখনও পর্যন্ত জানা নেই। তাই বড্ড ভয়ে আছি আমরা।’’

আজ কেবল এই কথাটাই ভাবছি সারদিন… এই অপরূপ পৃথিবী ছেড়ে মানুষ বসতি গড়বে ভিন কোন গ্রহে? সেখানে বৃষ্টি নামবে না আকাশ কালো করে। হেমন্তের বাদামী সন্ধ্যা, শীতের হিমে শিশিরের শব্দ আর শোনা যাবে না টিনের চালায়…। আর কেউ এই পৃথিবীকে ভালোবেসে বলবে না- আবার আসিব ফিরে ভোরের কাক হয়ে…

কিন্তু এইসব রোমান্টিক ভাবনার মাঝেই বাস্তবের রূঢ চেহারা নিয়ে হাজারটা প্রশ্ন হাজির হয়- মানুষের সঙ্গে সঙ্গে তো মানুষের বিশ্বাসও যাবে গ্রহান্তরে? সেই তো হিন্দু-মুসলমান, বৌদ্ধ-খ্রিস্টান, সাদা-কালো, বাঙালী-বিহারী, শ্রেষ্ঠ ধর্ম, শ্রেষ্ঠ জাতি, আমারটাই সেরা, আমারটাই নির্ভুল, আমিই শেষকথা… এইসব ভাইরাস নিয়েও যদি মানুষ নতুন বসতি গড়ে তো ফের বিশ্বযুদ্ধ! ফের আনবিক বোমা! মৃত্যু, রক্ত, দাস, যুদ্ধ, দেশান্তরিন, বৈষম্য… কি লাভ তাহলে মানব জাতির টিকে থাকার? মানুষ কি নতুন বসতিতে সব ধুয়েমুছে এক নতুন সভ্যতা গড়তে পারে না? হকিংরা কি মানব সভ্যতার এই বিভেদগুলোর কথাও ভাবছেন? জানা নেই…।